জেলা পরিষদ শেষ পর্বেও বিরোধী-হীন

অথচ, গোড়া থেকেই বিজেপি থেকে শুরু করে অন্য বিরোধী দলের নেতারা দাবি করে এসেছিলেন ‘প্রতিরোধ’ গড়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে দেখিয়ে দেবেন।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১১:৩৫
Share:

সঙ্ঘাত: এসইউসিআই মিছিলে বাধা লাঠি-বাহিনীর। সোমবার রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

যা ছিল, তাই-ই রইল। সোমবারও জেলা পরিষদের কোনও আসনে মনোনয়ন জমা দিতে পারল না বিরোধীরা। ফলে বিনা-যুদ্ধে বীরভূম জেলা পরিষদে নিরঙ্কুশ হওয়ার পথে শাসকদল তৃণমূল।

Advertisement

অথচ, গোড়া থেকেই বিজেপি থেকে শুরু করে অন্য বিরোধী দলের নেতারা দাবি করে এসেছিলেন ‘প্রতিরোধ’ গড়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে দেখিয়ে দেবেন। তবে এঁদেরই একাংশ গোড়া থেকেই সংশয়ে ছিলেন। জেলা বিজেপির বক্তব্য ছিল, বীরভূমের ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২ হাজার ২৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩২৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৪৬৫টি আসনের মধ্যে মনোনয়ন জমা গিয়েছে ৭৭টি আসনে। মনোনয়ন পরীক্ষায় বাদ গিয়েছেন কিছু প্রার্থী। সোমবার মনোনয়ন জমার সুযোগ পুরোমাত্রায় কাজে লাগাতে হলে প্রায় দু’হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত, ৪০০ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে মনোনয়ন দাখিল করতে হত। দিনের শেষে হয়নি সেটাই।

যে অশান্তির জন্য মনোনয়ন জমার দিন বাড়ল, সেই মনোনয়ন পর্বও রক্তাক্ত হল! শুধু তাই নয় ঝরল প্রাণও। সোমবার অগ্নিগর্ভ হয় সিউড়ির ১ নম্বর ব্লক। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষ, বোমাবাজি-গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দিলদার শেখ (৩৯) এর। পরিবার সূত্রের খবর, দিলদারের তিন মেয়ে। ছোট জনের বয়স তিন। বড় জন নবম শ্রেণিতে পড়ে।

Advertisement

শুধু সিউড়ি নয়। জেলার বিভিন্ন ব্লকেও একই ছবি দেখা গিয়েছে। সকাল থেকেই প্রবল উৎসাহী ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। কেউ ব্লক অফিসে জমায়েত দানা বাঁধতেও শুরু করেছিল। সব দেখে জড়ো হতে শুরু করেছিল সিপিএম কর্মীরা। কিন্তু, কাছাকাছি আসতেই কিছু দুষ্কৃতীর বাধায় আর মনোনয়ন জমা করা যায়নি বলে বিরোধী বিজেপি, সিপিএমের অভিযোগ। দুবরাজপুরে পঞ্চায়েত সমিতির হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসা এক বিজেপি প্রার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল পরে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

কড়িধ্যায় গোলমালের সময়ে আশাপাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অনেক মহিলা প্রার্থী থেকে তাঁদের প্রস্তাবকেরা। এমনই এক বাড়িতে ঢুকে দেখা গেল, সিড়ির তলায় চার প্রার্থী এবং প্রস্তাবকেরা ভয়ে কাঁপছেন। নাম, পরিচয় বলতে চাননি। শুধু বললেন, ‘‘এ ভাবে ভোটে দাঁড়ানো যায় না কি? শাসকেরই বা এ ভাবে ভোট করিয়ে কী লাভ?’’

তবে সবচেয়ে ক্ষোভ জমেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, এ দিন পুলিশকে কোনও সদর্থক ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আটকাতে কোনও কিছুই করেনি পুলিশ। কোন সাহসে দলের লোকেদের প্রার্থী হতে বলব বলুন তো?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement