আমিও: নিজের ছবি দেওয়া ডাকটিকিট হাতে খুদে। নিজস্ব চিত্র
ডাকটিকিটে খ্যাতনামাদের ছবিই এতদিন সবাই দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন। এ বার হঠাৎ করে খামে প্রিয়জনের ছবি দেওয়া ডাকটিকিট দেখলে অবাক হবেন না। কারণ কয়েক বছর আগেই ডাক বিভাগ ‘মাই স্ট্যাম্প’ প্রকল্প এনে প্রিয়জনের ছবি দিয়েও ডাকটিকিট তৈরি করার সুযোগ এনে দিয়েছে আমজনতাকে। সম্প্রতি এই সুবিধা চালু হয়ে গিয়েছে পুরুলিয়াতেও।
যোগাযোগের উন্নত মাধ্যম চলে আসায় এখন চিঠি লেখার চল অনেক কমে গিয়েছে। ডাক বিভাগকে তাই জনপ্রিয় করতেই এই উদ্যোগ। পুরুলিয়া ডাক বিভাগের সুপার তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেউ তাঁর নিজের বা প্রিয়জনের ছবি ডাক বিভাগকে দিলে, সেই ছবি ডাকটিকিটে মুদ্রিত করে দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ টাকা মূল্যের মোট ১২টি ডাকটিকিট দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য খরচ পড়ছে ৩০০ টাকা।’’ তিনি জানান, এই ডাকটিকিট চিঠি পাঠানোর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে।
ডাকবিভাগের কর্মীরা জানাচ্ছেন, প্রিয়জনের ছবি সম্বলিত এই ডাকটিকিট কেউ জন্মদিন, বিয়েবাড়ি বা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবেও দিতে পারেন। গোটা বিষয়টি উপহার প্রাপকের কাছে নতুন বলে মনে হবে। সেই সঙ্গে চমকও বটে।
প্রকল্পের সূচনাতেই পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা আনন্দ মুখোপাধ্যায় তাঁর নাতির ছবি দিয়ে ডাকটিকিট তৈরি করিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দারুণ ব্যাপার। এমনটা যে হতে পারে ভাবতে পারছি না।’’ বান্দোয়ানের বাসিন্দা দীপালি মাহাতো মেয়ে চুমকি মাহাতোর ছবি দেওয়া ডাকটিকিট বানিয়ে তুলে দিলেন মেয়ের হাতেই। তিনি বলেন, ‘‘ডাকটিকিটের সঙ্গে আমাদের অনেক নস্টালজিয়া জড়িয়ে রয়েছে। ছাত্রাবস্থায় ডাকটিকিট সাঁটানো আমার নামে চিঠি এলে বিরাট আনন্দ হতো। এখন মেয়ের ছবি দেওয়া ডাকটিকিট ওর হাতে তুলে দিলাম। এটা আমার কাছে অন্যরকম অভিজ্ঞতা।’’ তাঁর মেয়ে চুমকি ডাকটিকিট হাতে মাকে জড়িয়ে ধরল।
তপনবাবু বলেন, ‘‘এটাই এই প্রকল্পের সার্থকতা।’’ তিনি জানান, পাসপোর্ট ছবি ও বৈধ সচিত্র পরিচয় পত্র নিয়ে পুরুলিয়া মুখ্য ডাকঘরে এলেই সঙ্গে সঙ্গেই ওই ডাকটিকিট হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে জেলার বিভিন্ন ডাকঘরে গ্রাহকদের কাছে এই সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।