সচল: কর্মব্যস্ত নগর। বন্ধের সকালে রামপুরহাটে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
শাসকদলকে পরাস্ত করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিরোধী বিজেপি। সেই দলের ডাকা বন্ধে এলাকায় প্রভাব পড়বে— এমনই অনুমান করেছিল পুলিশ, প্রশাসন। বুধবার ভোর থেকে মল্লারপুর স্টেশনে ট্রেন অবরোধের আশঙ্কায় ছিলেন নিত্যযাত্রীরাও।
কিন্তু এ দিন সকালে অবরোধের পথে না গিয়ে বন্ধের সমর্থনে মিছিল করলেন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। মল্লারপুর, ফতেপুর, মল্লারপুর বাজার, আম্বা মোড়, বাহিনা মোড়, জাতীয় সড়কে ঘোরে মিছিল। মিনিট পঁয়তাল্লিশ ব্লক অফিসের সামনে জমায়েত করেন বন্ধ সমর্থকেরা। অভিযোগ, দফতরে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন বিডিও গোরাচাঁদ বর্মন, সভাপতি বনানী রায়। পরে এসডিপিও অভিষেক রায়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বন্ধের দিন জেলায় এ ছাড়া তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি। বন্ধের ডাক উপেক্ষা করে দোকান খুলে রাখায় আমোদপুর বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের মিষ্টিমুখ করালেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। বুধবার বন্ধের বিরোধিতা করে দলের আমোদপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে মিছিল করে তৃণমূল। রাজীববাবু জানান, মানুষ বিজেপি-র বন্ধকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বলেই তাঁদের মিষ্টি খাইয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
সিউড়িতে সরকারি বাস চললেও, বেসরকারি বাসের সংখ্যা ছিল কম। অনেক দোকান বন্ধ ছিল। পুলিশের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল ৯টা নাগাদ বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বাসস্ট্যান্ড হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোলা দোকানের মালিক-কর্মী, সরকারি ও বেসরকারিু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে বন্ধ সমর্থনের আবেদন জানান। সাময়িক ভাবে সেগুলির কয়েকটি বন্ধও হয়ে গিয়েছিল। তবে স্কুল, সরকারি অফিস, আদালতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে। একই ছবি ছিল দুবররাজপুর, রাজনগর, খয়রাশোলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক বা ১৪ নম্বর রাজ্য সড়কে পণ্যবাহী বা অন্য গাড়ির সংখ্যা এ দিন কম ছিল।
বন্ধের তেমন প্রভাব পড়েনি বোলপুরে। এ দিন সকালে জোর করে দোকান বন্ধ করানোর অভিযোগে বোলপুর পুরসভার বিজেপি জনপ্রতিনিধি বিকাশ মিশ্রকে আটক করে পুলিশ। বন্ধ সফল না করার জন্য বেশ কিছু দোকানদারদের মিষ্টিমুখ করান শহর তৃণমূলের সদস্যেরা। এ দিন সকাল ৯টায় মল্লারপুর বাজারের প্রায় নব্বই শতাংশ দোকান বন্ধ থাকতে দেখা যায়। বিজেপি কর্মীরা জাতীয় সড়কের বাহিনা মোড়ে জমায়েত করেন। মল্লারপুর ছাড়া মহকুমা এলাকায় বন্ধের খুব বেশি প্রভাব চোখে পড়েনি। তবে মুরারই ও বুধিগ্রাম ছাড়া অন্য রুটে বেসরকারি বাস চলেনি। বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সম্পাদক জামারুল ইসলাম জানান, মালিকেরা বাস চালু রাখার জন্য বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু কর্মচারীরা ঝুঁকি নিতে রাজি না হওয়ায় বাস কম চলেছে। রামপুরহাট শহরে প্রধান প্রধান রাস্তায় দোকান সকালের দিকে বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়তেই খুলে যায়। স্কুল, কলেজ খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল কম।
নানুর, লাভপুর, সাঁইথিয়ায় বেসরকারি বাস চলাচল বন্ধ থাকা ছাড়া বন্ধের তেমন প্রভাব পড়েনি। দোকান, স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। ময়ূরেশ্বর এবং স্থানীয় কোটাসুর মোড়ে কয়েকটি দোকান বন্ধ ছিল। বিজেপি নেতা সদানন্দ মণ্ডলের দাবি, ৭০ শতাংশ দোকান বন্ধ ছিল। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র জানান, কয়েক জন বিজেপি কর্মীর দোকান ছাড়া সব খোলা ছিল।