ভিড়: রামপুরহাট কলেজ চত্বরে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
কলেজ খোলার প্রথম দিনে ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতিতে বাঁধা ভাঙা উচ্ছ্বাসে কোভিড বিধি শিকেয় উঠল জেলার নানা জায়গায়। কোথাও যেমন কলেজ চত্বরে মোটরবাইক রাখা নিয়ে কলেজ চত্বরে ছাত্রদের বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে পুলিশ ডাকতে হয়েছে, কোথাও আবার পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার বেশি হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে মাইকিং করে পড়ুয়াদের বের করে দিতেও হয়েছে। অধিকাংশ কলেজেই ক্লাসের মধ্যে যতটা কোভিড বিধি মেনে চলতে দেখা গিয়েছে ক্লাসের বাইরে দীর্ঘদিন পরে আড্ডায় কোভিড বিধির চিহ্নমাত্র দেখা যায়নি। তবে দীর্ঘ দিন পরে কলেজ খোলার ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মধ্যে সর্বত্রই উৎসাহ উন্মাদনা দেখা গিয়েছে।
রামপুরহাট কলেজে এ দিন সকাল নটা নাগাদ গিয়ে দেখা যায় সংস্কৃত এবং ইংরেজি এমএ ক্লাসের জন্য বর্ধমান শহর এবং রানিগঞ্জ থেকে পড়ুয়ারা হাজির হয়েছেন। বেলা গড়াতেই কলেজ চত্বরে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক সময় কলেজ চত্বরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ঋতুপর্ণা সিংহের উপস্থিতিতে পড়ুয়াদের সবুজ আবির খেলায় উচ্ছ্বাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। পরস্পরকে আলিঙ্গনে কোভিড বিধির লেশমাত্র ছিল না। কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেত্রী পিঙ্কি নায়েক জানান, ‘‘কলেজ খোলার প্রথম দিন নিজেদের মধ্যে আনন্দে পরস্পর পরস্পর সবুজ আবির দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে ও মিষ্টিমুখ করা হয়েছে।’’
এ দিকে কলেজে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার বেশি থাকার কারণ হিসেবে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় জানান, কলেজের ওয়েবসাইটে এবং কলেজের নোটিস বোর্ডে যে সমস্ত পড়ুয়াদের প্রথম দিন কলেজে আসার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছিল তার বাইরেও অন্য সিমেস্টারের পড়ুয়ারাও এসেছিল। যাঁদের আসার কথা বলা হয়নি তাঁদেরকে চলে যেতে বলা হয়। তবে কলেজ চত্বরে আবির খেলা হয়নি বলে দাবি করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ চত্বরে মোটর বাইক রাখা নিয়ে কলেজের ছাত্রদের মধ্যে জটলা বেঁধে যায়। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশের দ্বারস্থ হন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের মাঠে বসে পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরা নিজেদের মধ্যে কোভিড সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করেন। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ, বোলপুর কলেজ, সাঁইথিয়া অভেদানন্দ কলেজ, মল্লারপুর টুরকু হাঁসদা লপসা হেমব্রম কলেজ, নলহাটি হীরালাল ভকত কলেজ, মুরারই কবি নজরুল কলেজ-সহ জেলার অন্য কলেজগুলিতেও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল উল্লেখযোগ্য। সর্বত্রই ক্লাসের মধ্যে পড়ুয়া মাস্ক এবং দূরত্ব বিধি মেনে ক্লাস করলেও ক্লাসের বাইরে মাস্ক বা দূরত্ব বিধি মেনে চলতে দেখা যায় নি।
কিছু কিছু কলেজে কোভিড বিধি মেনে শ্রেণি বিন্যাস করে পড়ুয়াদের ক্লাসে বসাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ঘরের অভাব দেখা গিয়েছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি শ্রেণি বিন্যাস করে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ঠিক হবে। এবং সেক্ষেত্রে অফ লাইন এবং অন লাইনে ক্লাস নেওয়ার সমস্যাও ধীরে ধীরে দূর হবে বলে বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন।