প্রদীপ রায়। নিজস্ব চিত্র
সিপিএমের ৬০ সদস্যের পুরুলিয়া জেলা কমিটি গঠিত হল। রবিবার রাতে পুঞ্চায় লৌলাড়া রাধাচরণ অ্যাকাডেমির মাঠে জেলা সম্মেলনের কর্মিসভায় ওই কমিটি গঠন হয়েছে। জেলা কমিটির সম্পাদক হয়েছেন আদ্রার বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক প্রদীপ রায়। সোমবার জেলা কমিটির ৫৮ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি দু’জনের নাম পরে জানানো হবে বলে বলা হয়েছে। দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটিতে ৬ জন আমন্ত্রিত সদস্য রয়েছেন।
শনি ও রবিবার পুঞ্চায় সিপিএমের ২০তম জেলা সম্মেলন হয়েছে । জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫৪টি এরিয়া কমিটির ৩৭৫ জন প্রতিনিধি কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন। দল সূত্রের খবর, পুরুলিয়া জেলায় বর্তমানে সদস্য ১৬ হাজারের কিছু বেশি। সেই সংখ্যার ভিত্তিতে কমিটি তৈরি হয়েছে।
প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মনীন্দ্র গোপ শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জেলা পদ থেকে আগেই অব্যাহতি চেয়েছিলেন। গতবারই সম্মেলন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রবিবার রাতের কর্মিসভায় রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র উপস্থিত সদস্যদের সামনে জেলা কমিটির সদস্যের নাম জানান। জেলা সম্পাদক হিসাবে আদ্রার বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক প্রদীপ রায়ের নাম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
সম্মেলন শুরুর আগে থেকেই সিপিএমের অন্দরে নতুন জেলা সম্পাদক হিসাবে কানাঘুষোয় দু’টি নাম শোনা যাচ্ছিল— নিখিল মুখোপাধ্যায় আর প্রদীপ রায়। দুজনেই শ্রমিক সংগঠনের নেতা। নিখিলবাবু গোড়া থেকেই শ্রমিক সংগঠনে কাজ করছেন। প্রদীপবাবু দলের ছাত্র সংগঠন, যুব সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনে কাজ করছেন। শেষ পর্যন্ত জেলা সম্পাদক হলেন প্রদীপবাবু। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘মণীন্দ্রদা অসুস্থ বলে সম্পাদকের কাজকর্ম সামলানো মুশকিল। তবে উনি আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। নেতৃত্বও দেবেন। প্রদীপবাবু জেলা সম্পাদক হয়েছেন। সবাই একসঙ্গে কাজ করব।’’
বাম মন্ত্রীসভার সদস্য অচিন্ত্য রায়ের ভাইপো প্রদীপবাবু। রঘুনাথপুর মহকুমা কমিটির যুব সংগঠনের সভাপতি হয়ে প্রথম নেতৃত্বের নজর কাড়েন। বাঁকুড়ার দীর্ঘদিনের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার ছত্রছায়ায় থেকে কাজ করেছেন। দলের মূল সংগঠনের হয়ে কাশীপুর লোকাল কমিটিতে কাজের দায়িত্ব পেয়ে দলকে জনমুখী করতে ফুটবল প্রতিযোগিতা, পরবর্তীকালে আদ্রা উৎসব— এমন নানা কিছুই করেন তিনি।
যে পুঞ্চায় দলের জেলা সম্মেলন হল, সেখানকার বাসিন্দা ছিলেন নকুল মাহাতো। পুরুলিয়ায় দলের জন্মলগ্ন থেকে টানা প্রায় চার দশক জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। সেই পুঞ্চার সম্মেলন থেকেই জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, ‘‘২০০১৫-এর অগস্টে নকুলদাই চাকরি ছেড়ে দলের সর্বক্ষণের কর্মী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সময় দিয়েছিলেন ৯০ দিন। তবে আমার সিদ্ধান্তটা নিতে এক দিন লেগেছিল।’’ রাজ্য ও জেলা কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে দলের সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির কাজ চালিয়ে যাওয়া তাঁর লক্ষ্য বলে জানান তিনি।