প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে, স্কুলে, রাস্তায় যৌন নিগ্রহের শিকার হয় অনেক নাবালিকাই। কিন্তু ভয়ে সে কথা কাউকে জানাতে চায় না অনেক সময়। কখনও সন্তানের এমন হেনস্থার কথা জেনেও লোকলজ্জার ভয়ে নীবর থাকেন অভিভাবকেরাও।
এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের কী করা উচিত তা জানাতে এ বার পথ দেখাবে একটি ‘মোবাইল গেম অ্যাপ্লিকেশন’। ৯ জুন শিশু সুরক্ষা দিবসে ‘স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস’-এর (রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ) তৈরি ওই ‘অ্যাপ’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ওই সংস্থার বক্তব্য, এর মাধ্যমে পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেসেন্স) আইন সম্পর্কে অভিভাবকদের মনে একটা সুস্পষ্ট ধারণা গড়ে দেওয়া যাবে। তেমন পরিস্থিতিতে পড়লে কী করা প্রয়োজন, তারও পথ দেখাবে।
আয়োগের চেয়ারপার্সন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় চক্রবর্তী জানান, এখন বাড়িতে বাড়িতে স্মার্ট ফোন। মোবাইলে ‘গেম’ খেলতে ভালবাসে শিশুরা। যৌন হেনস্থার শিকার হলে কী করণীয় তা খেলার ছলে এ বার শিখতে পারবে শিশুরা। সঙ্গে তাদের অভিভাবকেরাও। অনন্যাদেবীর বক্তব্য, ‘‘অনেক বেশি সংখ্যক শিশুর কাছে ওই গেম পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে এ ধরনের অপরাধ অনেকটাই রোখা সম্ভব হবে।’’
আয়োগ সূত্রে খবর, ‘গুগল প্লে স্টোর্স’ থেকে ডাউনলোড করে অফলাইন বা অনলাইনে ওই গেম খেলা যাবে। কারও কাছে মোবাইল ফোন না থাকলে আয়োগের ইন্টারনেট সাইটে গিয়ে স্কুলের কম্পিউটারে তা ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে। চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বলে দিয়ে একটি করে প্রশ্নের উত্তরে কয়েকটি বিকল্প উত্তর দেওয়া থাকবে। কোন বিকল্পে গেলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে, সেই পথেই এগোতে হবে। ওই গেম খেলতে খেলতেই শিশু এবং তাদের অভিভাবকেরা শিখে যাবেন যৌন হেনস্থার মতো পরিস্থিতিতে কী করা উচিত।’’
কয়েক মাস আগে কলকাতার দু’টি বেসরকারি স্কুলে দুই নাবালিকা পড়ুয়ার উপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ব্যতিক্রম নয় বীরভূমও। ২০১২ সালে পকসো আইন লাগু হওয়ার পরও শিশুদের উপর যৌন নিগ্রহের অনেক ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু ক্রমে বাড়ছে সচেতনতা। আয়োগের কর্তারা বলছেন, কোন স্পর্শ খারাপ, কোনটা ভাল তা শিখছে শিশুরা। বাড়ি, স্কুল, রাস্তায় যৌন নিগ্রহের শিকার হলে শিশু ও তার অভিভাবকদের কী করণীয়, তা নিয়ে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।