সিধো-কানহো আদিবাসী গ্রন্থাগারে বইয়ের খোঁজে। নিজস্ব চিত্র
আদিবাসী শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি বিষয়ক নানা বই রয়েছে। কিন্তু সেগুলিকে সব সময় হাতের নাগালে পাওয়া যায় না। জেলা সদর সিউড়িতে সেই মুশকিল আসান করেছে সিধো-কানহো আদিবাসী গ্রন্থাগার।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি কার্যালয়ের লাগোয়া ভবনে, জেলা পরিষদের অর্থ সাহায্যে, চলতি বছরের হুল দিবসের দিন এই গ্রন্থাগারটি উদ্বোধন করেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। গ্রন্থাগারটিতে ঢুকলেই দেখা যাবে, দেওয়ালে সিধো, কানহো ও পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মুর প্রতিকৃতি। দু’টি আলমারিতে ঠাসা বই। আর পাঠকদের জন্য বেশ কয়েকটি চেয়ার। ১৫ তারিখ বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উদ্যাপন হবে।
জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রন্থাগারে ইতিমধ্যেই ৪৮০টি বই রয়েছে। সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি হরফে, বাংলা হরফে এবং ইংরেজি ভাষায় লেখা বইগুলি লিখেছেন আদিবাসী কবি, সাহিত্যিক, দেশ ও বিদেশের গবেষকেরা। আগ্রহীরা নিয়মিত ওই গ্রন্থাগারে যাতায়াত করেছেন। ভবিষ্যতে বইয়ের সংখ্যা বাড়বে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে গ্রন্থাগারটি সামলাচ্ছেন এক আদিবাসী তরুণী। যিনি অলচিকি হরফে সড়গড়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সিউড়ি শহরের সঙ্গে সাঁওতাল বিদ্রোহের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। জেলা তথ্য সংস্কৃতি অঙ্গনটিকে ওই আন্দোলন ও আদিবাসী শিল্প সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে সরকার ও জেলা প্রশাসন। আটের দশকে থেকেই ওখানে একটি আদিবাসী সংগ্রহশালা, সিধো-কানহো চর্চাকেন্দ্র তৈরি হয়। সেই সময় থেকেই রয়েছে রয়েছে সিধো-কানহো নামাঙ্কিত একটি গ্রন্থাগারও। কিন্তু আদিবাসী শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক বইয়ের সংখ্যা ছিল খুব কম।
সেই অভাব দূর করতে এগিয়ে আসে জেলা পরিষদ। হুল দিবসের দিনই খোলা হয় শুধু মাত্র আদিবাসী শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি বিষয়ক বই সম্বলিত গ্রন্থাগারটি। জানা গিয়েছে, গ্রন্থাগারটিতে হুল আন্দোলন, সিধো, কানহোর জীবনী, সাঁওতাল সাহিত্যের ইতিহাস, আদিবাসী জীবন চর্চা, গান, লোকাচার-সহ নানা বিষয়ের বই রয়েছে। আছে সাঁওতালি ভাষা নিয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরা পড়াশোনা করছেন, তাঁদের জন্য বইও আছে। জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ বিশ্ববিজয় মাড্ডি বলেন, ‘‘এই পাঠাগার ভীষণ উপকারে লাগবে।’’