ট্রাক থেকে নামছেন জওয়ানেরা। পুরুলিয়া স্টেশনে সোমবার। নিজস্ব চিত্র
নাগাল্যান্ডে ফিরে গেলেন পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে মোতায়েন থাকা নাগা জওয়ানেরা। জেলার ছ’টি শিবিরে এত দিন আইআরবি ১৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা ছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় বিশেষ ট্রেনে তাঁরা পুরুলিয়া স্টেশন থেকে ডিমাপুরের উদ্দেশে রওনা হন। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘নাগাবাহিনী যে সমস্ত শিবিরে মোতায়েন ছিল, সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে।’’
মাওবাদী নাশকতায় উত্তাল পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে অযোধ্যা পাহাড়কে ঘিরে ২০১০ সালের অগস্টে মোতায়েন করা হয় নাগা বাহিনীর ১০ নম্বর ব্যাটালিয়নকে। বলরামপুরের পাথরবাঁধ, কুমারীকানন, আড়শার শিরকাবাদ, বাঘমুণ্ডির অযোধ্যা হিলটপ ও পাহাড়ের নীচে পিপিএসপি ও কোটশিলার মুরগুমা— এই ছ’জায়গায় ছ’কোম্পানি জওয়ান ছিলেন। পরে ব্যাটালিয়ন বদলেছে।
রাজ্যে পালাবদলের পরেও জেলায় একাধিক মাও-নাশকতার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১১ সালের নভেম্বরে অযোধ্যা পাহাড়ের পাদদেশে বলরামপুরের খুনটাঁড় গ্রামে মাওবাদীদের গুলিতে খুন হন বাবা ও ছেলে। সে রাতেই মাওবাদীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর মুখোমুখি গুলির লড়াইয়ে এক নাগা জওয়ানেরও মৃত্যু হয়। তার পরে অবশ্য আর নাশকতার ঘটনা জেলায় ঘটেনি। ২০১২ সালের অগস্টে মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের নেতা বিক্রম ওরফে অর্ণব দাম ধরা পড়েন। তার পরে পরেই ওই স্কোয়াড ভেঙে যায়।
প্রথম মোতায়েন হওয়ার পরে, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়েছিল নাগা বাহিনী। ভাষা নিয়ে প্রথম প্রথম কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে জঙ্গলমহলের মানুষের ভীতি কাটিয়ে বেশ কাছাকাছি চলে আসেন জওয়ানেরা। কোথাও গ্রামের ছেলেদের খেলার সরঞ্জাম কিনে দিয়েছেন, কোথাও চাষের সমস্যায় পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এ দিন বিভিন্ন শিবির থেকে জওয়ানেরা বাসে আর ট্রাকে চেপে পুরুলিয়া স্টেশনে পৌঁছন। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে তাঁদের জন্য দেওয়া হয়েছিল বিশেষ ট্রেন। জেলা পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, নাগা বাহিনীর বদলে পুরুলিয়ায় সিআরপির আসার কথা রয়েছে। এ দিন পুরুলিয়ায় দায়িত্বে থাকা নাগা বাহিনীর ব্যাটেলিয়নটির সিও মন্ডকো ইয়াংচু বলেন, ‘‘পুরুলিয়াকে ভুলতে পারব না। যে কাজের জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাতে স্থানীয় মানুষের সহায়তা পেয়েছি।’’