পুরুলিয়ায় বধূর রহস্যমৃত্যু। —নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের ৪ মাসের মাথায় বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু! মেয়েকে পণের জন্য খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বাবা। শুক্রবার এমনই ঘটনায় তোলপাড় পুরুলিয়ার জয়পুর থানার প্রতাপপুর এলাকা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুরুলিয়া জেলার আড়ষা থানা এলাকার চিটিডি গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রেশ্বর মাহাতো। মাস চারেক আগে পুরুলিয়ার জয়পুর থানার প্রতাপপুর গ্রামের বাসিন্দা সমীর মাহাতোর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের সময় জামাই সমীর মাহাতোর দাবি ছিল, মোটা অঙ্কের নগদ টাকা দিতে হবে। সেই সময় ভদ্রেশ্বর তা দিতে পারেননি। এ জন্য শ্বশুরবাড়ি যাওয়া ইস্তক মেয়েকে কথা শুনতে হত বলে দাবি করেছেন তিনি।
মেয়ে যাতে ভাল থাকে এ জন্য ভদ্রেশ্বর ৮৫ হাজার টাকা জোগাড় করে জামাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হননি জামাই ও তাঁর পরিবার। মেয়ের উপর অত্যাচার চলতেই থাকে। ভদ্রেশ্বরের কথায়, ‘‘জামাইয়ের দাবি ছিল একটি বাইক এবং দু’ভরি সোনা দিতে হবে। আমি সেগুলি দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু গত মাসের ২৪ তারিখ সকাল ৮টা নাগাদ আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে যে, বাবা তুমি লোক পাঠাও আমি তোমার কাছে যাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। নিজেকে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য পরিচয় দিয়ে এক জন আমায় বলে লোকজন নিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যেতে হবে। দুপুর ১২টা নাগাদ আমি পৌঁছে দেখি মেয়ে আর নেই!’’ বিলাপ করতে করতে কন্যাহারা বাবা বলেন, ‘‘ওদের দাবি সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করলে আমার মেয়ে কুন্তিকে মরতে হত না।’’
মৃতা কুন্তির শ্বশুরবাড়ির দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। যদিও তা মানতে নারাজ কুন্তির বাবা। তিনি জয়পুর থানায় মেয়ের স্বামী, শাশুড়ি, ভাসুর এবং জায়ের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি বলে খবর।