বুক জলে দাঁড়িয়ে সাংসদ ও বিধায়ক। রবিবারের নিজস্ব চিত্র।
হাতের কাছে স্পিডবোটও নেই, নৌকোও নেই। এই পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত গ্রামবাসীর খবর নিতে সাঁতরেই গ্রামে পৌঁছলেন সাংসদ ও বিধায়ক। কোতুলপুরের আমোদর নদের তীরে রবিবার বাগরোল আদিবাসী পাড়ার ঘটনা।
নদের জলে গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় বাসিন্দাদের একাংশকে শনিবারই স্থানীয় বাগরোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যায় প্রশাসন। তবে প্রায় ১৭টি আদিবাসী পরিবার গৃহপালিত পশুর টানে ঘর ছাড়তে রাজি হননি। অগত্যা প্রায় ১০০ মিটার দূরের ত্রাণ শিবিরে ওই গ্রামবাসীদের কয়েক জন সাঁতরে গিয়ে খাবার সংগ্রহ করে আনছিলেন। প্রশাসনের তরফেও গ্রামে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু তাঁরা কেমন আছেন, তা দেখতে সরাসরি ওই গ্রামে যেতে চাইলেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও কোতুলপুরের বিধায়ক শ্যামল সাঁতরা। সেই সময় কোনও নৌকো বা স্পিড বোট ছিল না। তাই স্থানীয় কিছু ছেলেদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের খাবার, ত্রিপল নিয়ে সাঁতার কেটে তাঁরা গ্রামে গেলেন।
জনপ্রতিনিধিদের কাছে নিজেদের সমস্যার কথাও খুলে বলেন গ্রামবাসী। ওই গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ সোরেন, ফটিক হেমব্রম বলেন, “গরু, ছাগল, মুরগিগুলোই আমাদের সম্বল। বন্যার জলে অনেক বিষধর সাপ গ্রামে ঢুকেছে। এই পরিস্থিতিতে পশুগুলিকে ছেড়ে আমরা ত্রাণ শিবিরে যেতে চাইনি।” সৌমিত্রবাবু বলেন, “গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছে দেখলাম। আমি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নামের তালিকা বিডিও-কে দিয়েছি।” বিধায়ক শ্যামলবাবুর কথায়, “এই গ্রামটি এমনিতেই বন্যা কবলিত। তবে অন্যান্য বারের থেকে এ বার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আমরা গিয়ে গ্রামবাসীদের ত্রাণসামগ্রী তুলে দিয়েছি। তাঁদের সমস্যাও দেখে এসেছি।”
কোতুলপুরের ভারপ্রাপ্ত বিডিও প্রবীর শীট বলেন, “বাগরোল আদিবাসী পাড়ার পরিবারগুলিকে আমরা ত্রাণ শিবিরে আনতে চাইলেও গবাদি পশুর টানে তাঁরা আসতে রাজি হননি। তবে সময় মতো আমরা ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি গ্রামে।”