বোলপুরে প্রশ্নে পুলিশ

ব্যাঙ্কের ভিতরে টাকা ছিনতাই

ফের টাকা ছিনতাই। ফের ঘটনাস্থল বোলপুর-শান্তিনিকেতন। সোমবার সকালে বোলপুর স্টেশন রোড এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই ঘটনায় ছিনতাইকারীদের শিকার হয়েছেন এক বৃদ্ধা। অবসরপ্রাপ্ত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে পেনশনের দশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে এক দুষ্কৃতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০১:১৩
Share:

ফের টাকা ছিনতাই। ফের ঘটনাস্থল বোলপুর-শান্তিনিকেতন।

Advertisement

সোমবার সকালে বোলপুর স্টেশন রোড এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই ঘটনায় ছিনতাইকারীদের শিকার হয়েছেন এক বৃদ্ধা। অবসরপ্রাপ্ত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে পেনশনের দশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছে এক দুষ্কৃতী। ব্যাঙ্কের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি। এলাকায় প্রায় দিনই চুরি, ছিনতাই লেগে থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নিয়তি রায় নামে বোলপুরের লায়েক বাজার সেনপট্টির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ব্যাঙ্কে নিজের পেনশনের টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। টাকা তোলার পরেই ঘটনাটি ঘটে বলে নিয়তিদেবীর অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ব্যাঙ্কের মধ্যে একটি টেবিলের পাশে টাকা গুনছিলাম। এক যুবক পাশে এসে হঠাৎ-ই আমাকে জানায়, নীচে মেঝেতে আমার টাকা পড়ে গিয়েছে। আমি নীচে তাকাতেই ওই যুবক আমার টাকার ব্যাগ হাতিয়ে পালিয়ে যায়।’’ তিনি জানান, রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে এমন ছিনতাইয়ের কথা তিনি অনেক শুনেছেন। কিন্তু, প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যাঙ্কেরই এমন ঘটনায় তিনি হতচকিত হয়ে যান। বৃদ্ধা চিৎকার করে ওঠার আগেই ছিনতাইকারী চম্পট দেয়।

Advertisement

এ দিকে, ঘটনার পরেই নিয়তিদেবী ব্যাঙ্কে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ব্যাঙ্কের মধ্যেই কী করে ছিনতাই হয়ে গেল, এই প্রশ্নের জবাবে মুখ খোলেননি। অন্য দিকে, ঘটনার খবর পেয়ে ব্যাঙ্কে ছুটে আসেন বৃদ্ধার মেয়ে-জামাইয়েরা। নিয়তিদেবীর দুই জামাই সুভাষ মণ্ডল এবং দেবাসিশ বসু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের মধ্যেই এমন ঘটলে নিরাপত্তা কোথায়? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।’’ ঘটনার কথা সবিস্তারে জানিয়ে বিকেলেই বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা।

ঘটনা হল, দিন কয়েক আগেই লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বেরতে না বেরতেই আর এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে তা ছিনতাই করে নেওয়া হয়েছিল। ওই এলাকায় দুই সাইকেল আরোহীকে মারধর করে তাঁদের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছিল দুই মোটরবাইক আরোহী। দোকানে মিষ্টি কেনার সময়ে বোলপুরের নেতাজি রোডে একটি মোটরবাইকে রাখা কয়েক হাজার টাকা ও সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনাও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছিল। আবার দিন দুয়েক আগেই দোকান থেকে ইদের বাজার করতে এসে বোলপুরের মিশন কম্পাউন্ড এলাকায় সর্বস্ব খোওয়ান পাড়ুইয়ের কসবা এলাকার এক দুই মহিলা।

প্রায় প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই এই শহরের বেহাল নিরাপত্তা ব্যবস্থাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কাছাকাছি দু’টি থানা গড়েও যা রোখা যায়নি। অভিযোগ, প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই অপরাধ রোখা দূরের কথা, পুলিশ ছিনতাইকারীদের ধরতেও পারেনি। কোনও সামগ্রীও উদ্ধার হয়নি। উল্টে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শহরবাসীকে নিরাপত্তা দেওয়া দূরের কথা বরং দিনরাত ট্রাক-লরির থেকে তোলা তুলতেই ব্যস্ত পুলিশের একাংশ। যার জেরে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে রাস্তা ছেড়ে ব্যাঙ্কের ভিতরেও অপরাধ চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতির বদল চেয়ে জেলা পুলিশের কর্তাদের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন বাসিন্দারা। পুলিশের যদিও দাবি, প্রতিটি ঘটনারই তদন্ত চলছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলার অভিযোগও ঠিক নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement