কারও একশো শতাংশ কাজ সারা, কেউ আবার পড়ে রয়েছে বারো-পনেরো শতাংশে!
মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন ব্লকের কাজের এমন গতি দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে নির্মল বাংলা প্রকল্প নিয়ে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পঞ্চায়েত দফতরের রাজ্য আধিকারিক ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকশো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শৌচাগার তৈরির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাওয়া রাইপুর ব্লক যেমন পুরস্কৃত হয়েছে, তেমনই প্রকল্পে পিছিয়ে থাকা এলাকার পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা ভৎর্সনাও শুনেছেন।
বাঁকুড়ায় এই প্রকল্পে মাত্র ৩২ শতাংশ কাজ হয়েছে এখনও পর্যন্ত। তার মধ্যে বহু ব্লকই এখনও ২০ শতাংশও কাজ শেষ করতে পারেনি। যার ফলে সার্বিক ভাবে এই জেলার ফলাফল বেশ খারাপ। এ নিয়ে প্রকাশ্য মঞ্চেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে ছাড়েননি মন্ত্রী সুব্রতবাবু। দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সৌরভকুমার দাস, দফতরের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকারও তীব্র সমালোচনা করেন।
সৌরভবাবু বলেন, “টাকা-পয়সা মিলছে না অজুহাত দিয়ে এই প্রকল্পে ব্যর্থতা ঢাকা যাবে না। শৌচালয় গড়ে দেওয়া ও তার ব্যবহার নিয়ে ঘরে ঘরে প্রচার করতে হবে।” দিব্যেন্দুবাবু প্রশ্ন তুলেছেন, “যদি রাইপুর, বাঁকুড়া ১ ও ইন্দাস ব্লক পারে, তাহলে কেন বাকি ব্লকগুলি এই কাজ করতে পারছে না? আমি শুনেছি এই জেলায় বহু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানই খোলা মাঠে শৌচকর্ম করেন। নিজেরাই যদি সচেতন না হন, তাহলে অন্যকে সচেতন করবেন কী করে?”
প্রকল্পের কাজের গতি বাড়াতে এই জেলাকে ১২০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাঁকুড়ায় পানীয় জলের সমস্যার সমাধান আমরা করেছি। তবে ঘরে ঘরে শৌচালয় না গড়ে দেওয়া পর্যন্ত এই জেলার প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। আমি বাঁকুড়াকে ১২০ কোটি টাকা দেব। আশা করব তাতে কাজে গতি আরও বাড়বে।”
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের মধ্যেই নির্মলবাংলা মিশন শেষ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই জেলায় এখনও লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক শৌচালয়ও গড়তে পারেনি প্রশাসন। সময়ের মধ্যে কি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যাবে? জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু অবশ্য এ দিন দাবি করেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেই আমরা আশাবাদী।”