এটিএম কার্ড ‘ক্লোন’ করে টাকা লোপাট

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কীর্ণাহারের বাসিন্দা ওই শিক্ষক দম্পতির নাম সৌম্যজিৎ মল্লিক এবং অদিতি ভট্টাচার্য মল্লিক। তাঁরা নানুরের নতুনগ্রাম হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কীর্ণাহার শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:০৬
Share:

এই এটিএম থেকেই শেষবার তোলা হয়েছিল টাকা। নিজস্ব চিত্র

এটিএম কার্ড জাল করে দিন কুড়ি আগে এক শিক্ষক দম্পতির অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় ৮০ হাজার টাকা লোপাট করা হয়েছে। সেই ঘটনার এখনও কোনও কিনারা হয়নি। উল্টে তারপর থেকে প্রতিদিনই টাকা লোপাটের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। এর ফলে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই শিক্ষক দম্পতি। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার জয়দীপ দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর বেশি কিছু মন্তব্য করতে পারব না।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কীর্ণাহারের বাসিন্দা ওই শিক্ষক দম্পতির নাম সৌম্যজিৎ মল্লিক এবং অদিতি ভট্টাচার্য মল্লিক। তাঁরা নানুরের নতুনগ্রাম হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। স্থানীয় পরোটা গ্রামের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁদের যৌথ নামে পাসবই রয়েছে। ১২ নভেম্বর সেই পাসবই থেকে প্রথম এটিএম কার্ডের মাধ্যমে তাঁরা বোলপুর স্টাইল বাজার সংলগ্ন ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার থেকে ৬ হাজার টাকা তোলেন। তারপর ১৭ নভেম্বর মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারেন তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় ৪০ হাজার করে ৮০ হাজার টাকা লোপাট করা হয়েছে।

ওই শিক্ষক দম্পতি জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় নথি উদ্ধার করে জানা গিয়েছে, ক্লোনড এটিএম কার্ড ব্যবহার করে জামসেদপুরের একটি এটিএম কাউন্টার থেকে জিসিসি-র (গ্রিন চ্যানেল) মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার শ্রীরামপুরের নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ৪০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই এটিএম কাউন্টার থেকে একই দিনে বাকি ৪০ হাজার টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কী করে সম্ভব হলো ওই প্রতারণা? সাইবার ক্রাইম দফতরেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা বোলপুরের ওই এটিএম কাউন্টারে যন্ত্র লাগিয়ে সৌম্যজিৎবাবুর ব্যবহৃত এটিএম কার্ডের ‘ক্লোন’ অর্থাৎ নকল কার্ড তৈরি করে নেয়। গোপন ক্যামেরায় পিন নম্বরও হাতিয়ে নেয়। প্রাথমিক তদন্তের পর সাইবার ক্রাইম দফতরের অনুমান, ওই তথ্য হাতিয়েই দুষ্কৃতীরা নকল এটিএম কার্ড তৈরি করে ওইভাবে টাকা লোপাট করেছে।

ওই ঘটনার পর থেকে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক দম্পতি। সৌম্যজিৎ জানিয়েছেন, ‘‘পুলিশ, সাইবার ক্রাইম দফতর ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও টাকা উদ্ধার হয়নি। বরং তারপর থেকে প্রতিদিনই মোবাইলের মেসেজ মারফত জানতে পারছি টাকা তোলার অপচেষ্টা চলছে। সেইজন্য খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’

পুলিশ জানায়, বিষয়টি সাইবার ক্রাইম দফতরকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি তদন্তও চলছে। জেলা সাইবার ক্রাইম দফতরের এক কর্তা জানান, মুর্শিদাবাদের ওই ব্যক্তিকে জেরা করে জানা গিয়েছে ব্যাপারটি তিনি জানেন না। তাঁর অ্যাকাউন্ট নম্বর হাতিয়েই দুষ্কৃতীরা ওই দুষ্কর্ম করেছে। একই ভাবে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা লোপাট হয়েছে। দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement