চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
পুরুলিয়ার বরাবাজারের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ছড়িয়ে থাকা অবৈধ পাথর খাদানগুলি চিহ্ণিত করার কাজ শুরু করল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার, বন দফতর ও স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের তরফে এই কাজ শুরু করা হয়েছে।
বরাবাজারের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে অবৈধ খাদানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর তোলার অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার সেখানে যান পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দেখেন, কোথাও খাদানের পাথরের গায়ে জড়ানো রয়েছে সরু তার। কোথাও ডাঁই করা বড় বড় পাথরের চাঁই। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে পাথর তোলায় প্রায় খাদের চেহারা নিয়েছে বিভিন্ন খাদান।
প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী ওই ব্লকে বৈধ খাদান রয়েছে তিনটি। এ দিকে, একের পরে এক গ্রামে এই ছবি দেখে সভাধিপতি নিজেই প্রশ্ন তোলেন। তালাডি গ্রামের কিছু বাসিন্দা জানিয়েছিলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই খাদানে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর তোলা হচ্ছে। এমন কয়েকটি খাদান গড়ে উঠেছে যেখানে তাঁরা অতীতে জঙ্গল দেখেছিলেন। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘‘বিস্ফোরণ করার আগে চিৎকার করে সাবধান করে দেয়। মাঠে চাষের কাজ করলে তখন আমরা সব ফেলে পালিয়ে আসি। বিস্ফোরণের সময়ে ঘরবাড়িও কেঁপে ওঠে।’’
কোন খাদান কোন দফতরের জমির উপরে রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন সভাধিপতি। মহকুমাশাসক (মানবাজার) বিষ্ণুব্রত ভট্টাচার্য জানান, ওই এলাকায় কতগুলি পাথর খাদান রয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে তা চিহ্ণিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা শাঁখারি ও কদমপুর গ্রাম লাগোয়া খাদানে গিয়ে ছবি তুলে আনেন। খাদানের অবস্থান ‘জিপিএস’-এর মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘বন দফতরের জমি, রায়তি জমি বা সরকারি খাস জমিতে কোথায় কোথায় খাদান রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরেই বলা যাবে, ব্লকে কতগুলি খাদান চলছে।’’
সুজয়বাবু এ দিন বলেন, ‘‘এখানে বেআইনি পাথর খাদানগুলিই আইনে পরিণত হয়েছে। তার কারণ, অনেক স্থানীয় মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এখানে বেশ কিছু পাথরভাঙা কল রয়েছে। সেগুলি বন্ধ হয়ে গেলে অনেক মানুষের রুজি রোজগার চলে যেতে পারে। তাই কলগুলি চালু রেখে খাদানগুলি নিয়ে পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। আমাদের লক্ষ্য, সরকারের রাজস্ব নিশ্চিত করা।’’