প্রতীকী ছবি
একশো দিনের কাজে শ্রমিকদের পরিবর্তে যন্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠল মানবাজার ২ ব্লকের শুশুনিয়া গ্রামে। সম্প্রতি মানবাজার ২ ব্লক প্রশাসনের কাছে এই মর্মে অভিযোগ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিকও রয়েছেন। রবিবার বিডিও (মানবাজার ২) তারাশঙ্কর প্রামাণিক বলেন, ‘‘যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’
শনিবারই জেলাশাসক রাহুল মজুমদার মানবাজার ২ ব্লক-সহ কিছু এলাকার কাজ পরিদর্শন করেন। কাজ পাচ্ছেন কি না, তা শ্রমিকদের কাছে জানতেও চান। তারই কিছু দিন আগে মানবাজার ২ ব্লকের তৃণমূলের জামতোড়িয়া-বড়গড়িয়া পঞ্চায়েতের রাঙ্গামেটা সংসদের শুশুনিয়া গ্রামে একটি হাপা তৈরির কাজে রাতের অন্ধকারে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে।
এ দিন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘ওই ঘটনাটি সম্পর্কে কেউ আমার কাছে অভিযোগ পাঠাননি। তা পেলে অবশ্যই তদন্ত হবে। কোনও বেনিয়ম হলে দোষীরা কেউ ছাড় পাবেন না।’’
সম্প্রতি বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরা এক পরিযায়ী শ্রমিক অভিযোগ করেন, ‘‘সবে দু’সপ্তাহের কোয়রান্টিন শেষ হয়েছে। ফেরার পরে স্থানীয় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল, একশো দিনের প্রকল্পে গ্রামে হাপা খননের কাজ দেওয়া হবে আমাদের। কিন্তু কয়েকদিন আগে দেখি, রাতের অন্ধকারে জমিতে যন্ত্র নামিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। যন্ত্র নামিয়েই যদি মাটি কাটা হয়, তাহলে আমরা কোথায় কাজ করব?’’ বিডিওকে তাঁরা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুশুনিয়া গ্রামের ওই জায়গায় একটি বোর্ড টাঙানো আছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, জামতোড়িয়া-বড়গড়িয়া পঞ্চায়েত থেকে ঊষর মুক্তি প্রকল্পে ডোবা খননের জন্য চার লক্ষ ১৫,৬৪৫ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি বাবদ প্রায় চার লক্ষ টাকা এবং ১৯৫৬ দিনের শ্রমদিবস ধার্য করা আছে।
কয়েকদিন আগে ওই অভিযোগ উঠলেও রবিবার পর্যন্ত সে সম্পর্কে বিশদে জানেন না তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান বাসন্তী মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘ঠিক কী ঘটেছে আমি জানি না। খোঁজ নেব।’’ তবে বিডিও বলেন, ‘‘নিয়ম রয়েছে একশো দিনের কাজে কেউ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না। স্থানীয় শ্রমিকদেরই কাজ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এই ঘটনাকে ঘিরে কটাক্ষ শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে সব শ্রমিক বাইরে থেকে ফিরেছেন, তাঁদের কাজ দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের নেতারা বড় গলায় বলছেন। অথচ শ্রমিকদের কাজ চুরি করা হচ্ছে!’’
তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের বরিষ্ঠ সহ-সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘আমাদের দল কখনও এই ধরনের কাজ সমর্থন করে না। তবে ওখানে কী ঘটেছে, তা জানা দরকার। প্রয়োজনে জেলার একশো দিনের প্রকল্পের নোডাল অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানো হবে।’’