—ফাইল চিত্র।
মেসের মালিকের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর এক ছাত্রী ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধর ও হুমকির অভিযোগ উঠল শান্তিনিকেতনে। রবিবার সকালে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরে পুলিশ ওই মেস বাড়ির মালিক দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এই ঘটনায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, তদন্তও শুরু হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, এ দিন বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কন্নাকি দাস তাঁর অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে রতনপল্লিতে নিজের ভাড়া বাড়িতে যান জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য। পানাগড়ের বাসিন্দা ওই ছাত্রী মেস ছেড়ে দিলেও তাঁর কিছু জিনিসপত্র রয়ে গিয়েছিল। লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের ভয় এই দুইয়ে মিলিয়ে তিনি তাঁর ব্যবহার্য জিনিসগুলো নিয়ে যেতে পারেননি।
এদিন সেগুলো নিতেই পরিবারের লোকজনকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় ও একটি কাগজে জোর করে সই করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। আপত্তি করায় ঘরে আটকে রেখে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। কন্নাকি দাস নামে ওই ছাত্রীর বাবা প্রকাশ দাসের অভিযোগ, ‘‘বাড়ির মালিক অমিতাভ দাশগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী ফল্গুশ্রীদেবী প্রথমে অভদ্র আচরণ করেন এবং বাড়ি ছাড়তে হলে একটি নির্দিষ্ট কাগজে সই করতে বলেন। একটি রড নিয়ে চড়াও হন মালিক দম্পতি। দরজা লাগিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়, রডের বাড়িতে ভেঙে যায় চশমাও।’’
কন্নাকি জানান, এই বাড়িতেই গত দেড় বছর ধরে তিনি ও তাঁর দুই সহপাঠী একসাথে থাকতেন। কিন্তু লকডাউন শুরুর পরে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। প্রত্যেকেই অন্তিম বর্ষের ছাত্রী হওয়ায় পরীক্ষা শেষের পর ভাড়া বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন। ইতিমধ্যেই একজন বাড়ি ছেড়েও দেন। অন্যজনের বাড়ি মেঘালয়ের শিলং-এ হওয়ায় তাঁর পক্ষে নিজের জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
প্রকাশবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরাও আমাদের জিনিসপত্র নিতে এসেছিলাম। ওই মালিক দম্পতি ছাত্রীদের উপর নানান শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন। এবার তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। মারধরের পরে কোনওরকমে সেখান থেকে বেরিয়ে এসেই সরাসরি শান্তিনিকেতন থানায় যাই ও সম্পূর্ণ ঘটনাটি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।’’
পুলিশ কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিযুক্ত ফল্গুশ্রী দাশগুপ্ত ও তাঁর স্বামী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘মিথ্যা বলছেন ওঁরা, এসব কিছুই করিনি আমরা।’’