তাঁকে ডাইন অপবাদ দিয়ে কয়েকজন পড়শি মানসিক নিযার্তন চালাচ্ছেন, এই অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন এক গ্রামবাসী। পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকার গাড়াফুসড় গ্রামের ঘটনা। এই গ্রামেই থাকেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রামের বাসিন্দা নিজামউদ্দিন আনসারির উপর এ রকম মানসিক নির্যাতন চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। শেষমেশ ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির এক সদস্যের সহায়তায় সোমবার ওই প্রৌঢ় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, ‘‘নিজামউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী এই গ্রামেই থাকেন। কর্মসূত্রে তাঁর ছেলেরা সবাই বাইরে থাকে। তাঁর পাড়ারই তিন ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে ওই প্রৌঢ়কে ডাইন অপবাদ দিয়ে শাসাচ্ছেন। অভিুক্তেরা তখনও আইসক্রিম, কখনও কাপড়, কখনও লোহালক্কড়ের ব্যবসা করেন সাইকেলে ঘুরে ঘুরে। মাঝে মাঝেই তাঁরা নিজামুদ্দিনকে শাসান এই বলে যে, সকালে বেরোনোর সময়ে তাঁর মুখ দেখে বেরিয়েছিলেন বলে ব্যবসা ভাল হয়নি। কখনও আবার বাড়ি বয়ে মারতেও আসে।’’ নিজামউদ্দিন জানান, প্রথম প্রথম বিষয়টি মিটে যাবে বলে তিনি ভেবেছিলেন। কিন্তু ইদানীং অপবাদ দেওয়া মাত্রা ছাড়িয়েছে। বিষয়টি পঞ্চায়েতে নিস্পত্তি হয়ে যাবে ভেবে প্রৌঢ় তাঁর প্রতি নির্যাতনের কথা গ্রাম পঞ্চায়েতেও জানান। কিন্তু, পঞ্চায়েত নিস্পৃহ থাকায় বাধ্য হয়ে সোমবার পুলিশের কাছে ওই তিন জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানান মধুসূদনবাবু। নিজামউদ্দিন বলেন, ‘‘ওরা অকারণে আমার নামে অপবাদ দিচ্ছে। টানা হুমকিও দিচ্ছে। তাই এ দিন পুলিশের কাছে এসেছি।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। গাড়াফুসড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান কমলকান্ত মাহাতো অবশ্য বলেন, ‘‘এ রকম কোনও অভিযোগ পঞ্চায়েতে জমা পড়েছে বলে আমার জানা নেই. খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ আর মন্ত্রী শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনা যে ওই গ্রামে ঘটছে, তা আমার জানা নেই। আমাকে কেউ বিষয়টি জানায়ওনি। তবে, আমি খোঁজ নেব। দেখছি কী করা যায়।’’