সমাজমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়েছে এমনই সব লেখা। নিজস্ব চিত্র।
জ্বালাপোড়া গরম সইতে অভ্যস্ত বাঁকুড়ার মানুষ। তবে এ বারে গ্রীষ্মের দহন যে কার্যত রেকর্ডের খাতায় নাম তুলে ফেলবে, তা-ও বৈশাখের শুরুতে, এ আশা ছিল না। বেসরকারি একটি ওয়েবসাইটের এ-ও দাবি, গত ২৪ ঘণ্টার পরিসংখ্যানে বিশ্বের সব চেয়ে উষ্ণ ১৫টি জায়গাগুলির তালিকায় নাম তুলে ফেলেছে বাঁকুড়া।
তবে রৌদ্ররোষে যখন প্রাণ অতিষ্ঠ, তখন বাঁকুড়ার তাপমাত্রা নিয়ে সমাজমাধ্যমে রঙ্গ-তামাশায় মেতেছেন মানুষজন। চলছে মেসেজ, ‘মিম’ চালাচালিও। সকাল সকাল ঘুম চোখে যেমন বন্ধুর মেসেজ পেয়ে ঘাবড়েই গিয়েছিলেন পাত্রসায়রের চন্দ্রদেব কুণ্ডু। কী লেখা ছিল মেসেজে? চন্দ্রদেব বলেন, “লেখা ছিল, ‘এ বার বড়লোক হব। আরবের মতো গরম পড়েছে। তেলও বেরোবে। আমরা বড়লোক হয়ে যাব।” তাঁর কথায়, “একে গরমের চোটে রাতভর ঘুম নেই। সকাল সকাল আবার সেই গরম নিয়ে রসিকতা। তবে রাগের চেয়ে হাসিই পেয়েছিল।”
এর সঙ্গে রয়েছে তাপমাত্রার দৌড়ে বাঁকুড়ার সাহারা মরুভূমিকে হারানো, খুব দ্রুত বাঁকুড়ার তাপমাত্রার ‘হাফ সেঞ্চুরি’ ছোঁয়া বা জেলায় উট চলাচলের রসিকতাও। বড়জোড়ার এক কলেজ ছাত্র অয়ন রায় বলছিলেন, “গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। তার মধ্যে অনেককে দেখছি, গরম নিয়ে নানা মজাদার ‘মিম’ বানাচ্ছেন। এ ভাবে কোথাও একটা স্বস্তি খোঁজার চেষ্টা।”
হাসি-ঠাট্টার মধ্যেও বিভিন্ন সোশ্যাল গ্রুপে দেওয়া হচ্ছে গাছ লাগানোর আবেদন। অবিলম্বে বিশ্ব উষ্ণায়নে রাশ টানা না গেলে উত্তরোত্তর তাপমাত্রার এমন জুলুম সইতে হবে, বার বার সচেতন করছেন পরিবেশবিদেরা। মানবিক নানা কার্যকলাপে লাগাম পরানোর পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সবুজ বাড়ানোর দিকেও।
বড়জোড়ার পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক সুনিলয় দাশগুপ্তের কথায়, “তাপমাত্রা বাড়ার বিভিন্ন কারণ আছে। তবে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা অবশ্যই বড় একটি কারণ। বনসৃজন করতে হবে। সভ্যতার অগ্রগতি ও মানুষের বিলাসিতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতেও পরিবর্তন এসেছে। তার ফল এই দাবদাহ।”