প্রতীকী ছবি
চূড়ান্ত তালিকা পরে নিজের ওয়ার্ড ‘ফিরে পেলেন’ পুরপ্রধান। তবে তাঁর দলেরই অনেকে নিজের ওয়ার্ডে লড়তে পারবেন না আসন্ন পুরভোটে।
সংরক্ষণের খসড়া তালিকায় রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি তাঁর নিজের ওয়ার্ডে এ বারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এর ফলে পুরপ্রধানের জন্য দলকে অন্য ওয়ার্ড ভাবতে হচ্ছিল। এই নিয়ে দলের মধ্যেও ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়েছিল বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সোমবার চুড়ান্ত তালিকা বের হতেই চিত্রটা বদলে গেল। রামপুরহাট পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধান, চার বারের কাউন্সিলর অশ্বিনী তিওয়ারির কাছে আপাতত তাঁর নিজের ওয়ার্ড, ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়ার সুযোগ থাকল। পরিস্থিতি বদলাল ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের। খসড়া তালিকায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড ছিল সাধারণ। চূড়ান্ত তালিকায় ওই ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হল। তবে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে সংরক্ষণের ধাক্কায় একাধিকবার জেতা ওয়ার্ড থেকে অনেক কাউন্সিলরই তাঁদের নিজেদের ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না।
আসন সংরক্ষণের ধাক্কায় রামপুরহাটের উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকার জেতা ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। শুধু উপ-পুরপ্রধান নয়, শাসক দলের একাধিক কাউন্সিলর তাঁদের দীর্ঘদিনের জেতা ওয়ার্ড থেকে এ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। ১৮ ওয়ার্ডের রামপুরহাট পুরসভার প্রকাশিত চূড়ান্ত সংরক্ষণের তালিকায় অসংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলি হল ২,৩, ৭,৮, ১১, ১২, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮। মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৪,৫,৬,৭,১০, ১৩, ১৬। মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলির মধ্যে ৪ ও ৬— এই দুটি ওয়ার্ড তফসিলি সংরক্ষিত। তাছাড়া ১ এবং ৯ এই দুটি ওয়ার্ড তফসিলি সংরক্ষিত।
৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর আব্বাস হোসেন এ বার তাঁর নিজের ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গত বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকারও এ বারে নিজের ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। একই রকম ভাবে সংরক্ষণের ধাক্কায় ১, ৯, ১০ ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলররা নিজেদের ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। তৃণমূলের নেতাদের মতোই গত বার ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত বিজেপি কাউন্সিলর, জেলা বিজেপির সহ সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী এ বারে নিজের ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। পুরসভার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিক ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর আগে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩ বার জয়ী হয়েছেন সঞ্জীব মল্লিক। গত বার ১৮ ওয়ার্ডের রামপুরহাট পুরসভার দলগত অবস্থান ছিল তৃণমূল ১০, বিজেপি ৪, কংগ্রেস ২ সি পি এম ২। পরবর্তীতে বিজেপির ৩, কংগ্রেসের ২ এবং সিপিএমের ১ কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন।
সংরক্ষণের ধাক্কায় সাঁইথিয়া পুরসভাতেও একই অবস্থা। বর্তমান পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত এ বারে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিপ্লব দত্ত এর আগে দু’বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৬ ওয়ার্ডের সাঁইথিয়া পুরসভার অসংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলি হল ১, ৪, ৭, ৮, ১২, ১৩, ১৪, ১৬। সংরক্ষিত ওয়ার্ডগুলি হল ২, ৫, ৬, ৯, ১০, ১১, ১৫। তার মধ্যে মহিলা সংরক্ষিত ২, ৫, ৬, ৯, ১১, ১৫। ৫ ও ৯ তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত। ১০ ও ১৩ তফসিলি সংরক্ষিত। সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিল্পব দত্ত বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে নিতে হবে। এর বাইরে দল যদি আমাকে অন্য ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয় তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। তা না হলে দলের নির্দেশ মেনে দলের হয়ে কাজ করব।’’
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে পুরসভা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ জানান, ‘‘দল সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। প্রতিটি পুরসভায় নির্বাচন কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটি প্রার্থী তালিকা ঠিক করে দেবে। সেই তালিকা জেলা কমিটি কেবল অনুমোদন দেবে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে দল জেলার ৫টি পুরসভাতেই তৃণমূলকে পরাজিত করেছিল। আমরা সেই ফল ধরে রাখতে পারব। প্রার্থী তালিকার প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি যাবতীয় নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’’