আড়াইশো গ্রাম প্লাস্টিক দিলে একটি ডিম

বছরভর কি এ ভাবেই প্লাস্টিক সংগ্রহ হবে? পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে গ্রামবাসী নিজেদের বাড়িতে প্লাস্টিক জমাবেন। পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে তাঁরা জমা প্লাস্টিক পঞ্চায়েতে দিয়ে যাবেন।

Advertisement

তারাশঙ্কর গুপ্ত

ইন্দাস শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

নতুন বছরের প্রথম দিনই বাঁকুড়ার ইন্দাসের মঙ্গলপুর পঞ্চায়েতকে ‘প্লাস্টিকমুক্ত’ করার শপথ নিয়েছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তারই অঙ্গ হিসাবে আগামী সপ্তাহে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কী সেই কর্মসূচি?

মঙ্গলপুরের উপপ্রধান সুকান্ত সরকার জানান, ২৪-৩১ ডিসেম্বর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি শিবির করা হবে। সেখানে ২৫০ গ্রাম প্লাস্টিক জমা দিলে মিলবে একটি ডিম। যিনি ৫০০ গ্রাম প্লাস্টিক জমা দেবেন তাঁকে দেওয়া হবে তিনটি ডিম। আর এক কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে পাওয়া যাবে সাতটি ডিম।

Advertisement

এই উপায়ে পঞ্চায়েত এলাকাকে প্লাস্টিকমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান পলি পণ্ডিত পাখিরা। তিনি বলেন, ‘‘এক মাস আগে থেকেই প্রচার শুরু হয়েছে। লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে।’’

বছরভর কি এ ভাবেই প্লাস্টিক সংগ্রহ হবে? পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে গ্রামবাসী নিজেদের বাড়িতে প্লাস্টিক জমাবেন। পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে তাঁরা জমা প্লাস্টিক পঞ্চায়েতে দিয়ে যাবেন।

কিছুদিন আগে প্লাস্টিকমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ার প্রস্তাব উত্থাপন করেন উপপ্রধান এবং পঞ্চায়েতের বাস্তুকার দেবময় চট্টোপাধ্যায়। সর্বসম্মতিতে তা গৃহীত হয়। সেই মতো পরিকল্পনা হয়।

পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে গ্রামে। মঙ্গলপুরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘খুব ভাল পদক্ষেপ করেছে পঞ্চায়েত। সর্বত্র মানুষের মধ্যে ভীষণ উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। অনেকে এখন থেকেই প্লাস্টিক জমাতে শুরু করেছেন।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী শ্যামগোপাল হাটি বলেন, ‘‘এখন মঙ্গলপুরের বাড়িতে বাড়িতে ঘুরলে দেখা যাবে, প্রায় সকলেই বস্তায় প্লাস্টিক জমিয়ে রাখছেন। বেশির ভাগ এলাকাই প্লাস্টিকমুক্ত হয়ে যাচ্ছে।’’ এই পদক্ষেপের ফলে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে আশাবাদী গ্রামবাসী। তাঁদের কথায়, ‘‘প্লাস্টিক জমে আর কোথাও নালা বন্ধ হয়ে যাবে না। পরিবেশ দূষণও কমবে।’’

লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে অন্য পঞ্চায়েতগুলির কাছে মঙ্গলপুর উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। বিডিও (ইন্দাস) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। শিবিরে যে প্লাস্টিকের বোতলগুলি জমা পড়বে, সেগুলি দিয়ে ব্লকের উদ্যোগে ‘ইকো ব্রিক’ বানানো হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই এলাকার বাজারগুলিতে পরিবেশবান্ধব থলে ও প্যাকেট সরবরাহের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যবহার করা হবে। ফলে, সদস্যাদের রোজগারও বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement