ধৃত লালু শেখ। নিজস্ব চিত্র
স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযুক্ত লালু শেখকে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে বুধবার পুলিশ দাবি করলেও, বৃহস্পতিবার তাকে শহরের উপকণ্ঠে বাইপাস এলাকা থেকে ধরা হয়। এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১২ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন। পকসো আইনে রুজু হওয়া মামলায় ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি রেকর্ডের নির্দেশ হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই ছাত্রী টিউশনে যাচ্ছিল। বিষ্ণুপুরের ভাটপুকুরের রাস্তায় বছর পঞ্চাশের লালু শেখ তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীর মায়ের দাবি, থানায় অভিযোগ করতে যাওয়া আটকাতে তাঁদের উপরে লাগাতার চাপ আসতে থাকে। বিষ্ণুপুর থানায় সোমবার ও মঙ্গলবার অভিযোগপত্র নিয়ে গেলেও এফআইআর হিসাবে নেওয়া হয়নি বলে তিনি মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছিলেন। পরে এসডিও (বিষ্ণুপুর) এবং এসডিপিও-র (বিষ্ণুপুর) কাছে আবেদন জানান। তার পরেই মঙ্গলবার রাতে পুলিশ মামলা শুরু করে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়ার বাসিন্দা লালু পুরসভার তালিকাভুক্ত ঠিকাদার। এলাকায় সে পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘লালু যে শ্যামবাবুর ঘনিষ্ঠ, তা সবাই জানেন। তাই লালুর গ্রেফতারি এড়াতে শাসকদলের একাংশ পুলিশের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিল। সে জন্যই পুলিশ ওকে ধরতে গোড়ায় গড়িমসি করে।’’
শ্যামবাবু সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে, তিনি স্বীকার করেছেন, ‘‘লালু গত বছর দেড়েক ধরে আমার লোকজনের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করছিল। তার আগে গত বিধানসভা ভোটে সে বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্যের হয়ে প্রচারে নেমেছিল। তবে, এই ঘটনার পরে আমি কড়া মনোভাব নিচ্ছি। লালু ১৫ বছর ধরে বিষ্ণুপুর পুরসভার ঠিকাদার হলেও, নিয়ম মেনে এ বার তাকে সাত দিনের মধ্যেই শো-কজ করে তালিকা থেকে বাদ দেব। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।’’ তুষারবাবু দাবি করেন, ‘‘ভোটের সময় লালুর গাড়ি ভাড়া নিয়েছিলাম। তবে, সে কখনই আমার সঙ্গে রাজনীতি করেনি। বিষ্ণুপুরবাসীর সঙ্গে আমিও তার সাজা চাইছি।’’
আদালত চত্বরে এ দিন লালু দাবি করে, “আমি নির্দোষ। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” ছাত্রীটির মায়ের দাবি, ‘‘অভিযুক্তের পরিবার এ দিন সকালে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ তোলার জন্য অনুরোধ করতে এসেছিল। কিন্তু, সেটা করলে অপরাধীরা সাহস পেয়ে যাবে। তা হতে দেওয়া যায় না।’’