পুরনো মুখই ভরসা বামের

রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে পুরনো সাংসদদের উপরেই ভরসা রাখল বামফ্রন্ট। শুক্রবার রাজ্য বামফ্রন্টের ঘোষিত ২৫টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকায় পুরুলিয়ার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন সাংসদ তথা অগ্রগামী কিসানসভার সাধারণ সম্পাদক বীরসিংহ মাহাতোকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

  পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০১:১০
Share:

(ডান দিক থেকে) সুনীল খাঁ ও বীরসিংহ মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে পুরনো সাংসদদের উপরেই ভরসা রাখল বামফ্রন্ট। শুক্রবার রাজ্য বামফ্রন্টের ঘোষিত ২৫টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকায় পুরুলিয়ার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন সাংসদ তথা অগ্রগামী কিসানসভার সাধারণ সম্পাদক বীরসিংহ মাহাতোকে। বিষ্ণুপুরের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে আর এক প্রাক্তন সাংসদ সিপিএমের সুনীল খাঁকে।

Advertisement

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের ক্ষেত্রে প্রার্থীর অভিজ্ঞতা ও তাঁর চারিত্রিক স্বচ্ছতা দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বীরসিংহবাবু কোনওদিন নির্বাচনে হারেননি। তাঁর মতো সংগঠক বিরল। জমিদারদের সঙ্গে লড়াইয়ে মিথ্যা মামলায় তাঁকে জেলও খাটতে হয়েছে। পুরুলিয়ায় তিনিই আমাদের সেরা প্রার্থী।’’

মাসখানেক আগে জেলা সম্মেলনের পর ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক নরহরি মাহাতো আচমকা বিজেপিতে যোগ দেন। ২০০৬ সালের পর থেকে নির্বাচনী বৃত্তের বাইরে থাকা বীরসিংহ মাহাতোকে তারপরেই দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেয় দল। দায়িত্ব নিয়েই দলত্যাগী নরহরিবাবুর সঙ্গে ভোটের ময়দানে তাঁর দেখা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। তাই বীরসিংহবাবুকে দল এই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী করায় অবাক হচ্ছেন না দলের পোড়খাওয়া নেতা-কর্মীদের অনেকেই।

Advertisement

স্কুল শিক্ষক তথা ফব-র অগ্রগামী কিসান সভার নেতা বীরসিংহবাবু প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন উপনির্বাচনে। ১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া কেন্দ্রের সাংসদ হন ফব-র চিত্তরঞ্জন মাহাতো। তাঁর মৃত্যুতে উপনির্বাচনে প্রথমবার সাংসদ হন বীরসিংহবাবু। তারপরে টানা চার বার (১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০৪ সাল) সাংসদ হন। ২০০৬ সালে একটি ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে তাঁর জেল হয়। ছাড়তে হয় সাংসদের পদ। উপনির্বাচনে সাংসদ হন তৎকালীন ফব নেতা নরহরি মাহাতো। উচ্চ আদালত থেকে বেকসুর খালাস হলেও নির্বাচনে আর প্রার্থী হননি বীরসিংহবাবু।

তাঁর রাজনীতিতে আসা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অনুগামী বাবা ভূষণ মাহাতোর হাত ধরে। পুরুলিয়ার উন্নয়নের দাবিতে ফব-র ডাকে ১৯৫৭ সালে সুইসা থেকে পুরুলিয়ায় পদযাত্রায় যোগ দেন। তখন তিনি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তারপরে ১৯৭৮, ১৯৮৩, ১৯৮৮ সালে তিনবার জেলা পরিষদের সদস্যও হন। ১৯৮৩ ও ১৯৮৮ সালে সহ-সভাধিপতি ছিলেন। এ দিন বীরসিংহবাবু বলেন, ‘‘আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম যে পুরুলিয়ায় লড়ব। কারণ এই লড়াই আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার।’’

বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী বড়জোড়ার মালিয়াড়ার বাসিন্দা সুনীল খাঁ ১৯৯৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন। বর্তমানে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বড়জোড়া ও সোনামুখী বিধানসভা সে সময় দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় ছিল।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বর্তমানে সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সদস্য সুনীলবাবু বলেন, “সাংসদ হিসেবে বড়জোড়া বা সোনামুখীতে আগেও আমি কাজ করেছি। জেলার বাকি এলাকাগুলির সঙ্গে আমার পরিচয় রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমেই। শীঘ্রই প্রচারে নামব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement