লাল: বাঁকুড়া শহরের রাস্তায় সিপিএমের ‘মহামিছিল’। বৃহস্পতিবার। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
বামেদের ‘মহামিছিল’ থেকে ‘প্রতিরোধের’ বার্তা দিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থীদের সমর্থনে বাঁকুড়া শহরে ‘মহামিছিল’ করে বামফ্রন্ট। সেই মিছিলে যোগ দেন সূর্যকান্তবাবু। নির্বাচন কমিশনকেও এদিন নিশানা করেছেন তিনি।
মিছিল শেষে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “নির্বাচন কমিশন সফল একথা বলা যাবে না। কারন ভোট কেন্দ্রের একশো মিটারের মধ্যেই মানুষ খুন হয়েছেন।’’ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন। কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।’’ সঙ্গে সংযোজন, “নির্বাচন কমিশনের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। আমি মানুষকে বলব, ভোট আপনাদের অধিকার। তা যদি কেউ ছিনিয়ে নিতে আসে, তবে প্রতিবাদ করতে হবে। তারপর প্রতিরোধ করতে হবে।’’ তারপর তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল একই। এই দু’টি দলের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই। এই রাজ্যে একমাত্র বিকল্প হচ্ছে বামফ্রন্ট।”
এদিন সকালে বাঁকুড়া শহরের পাঁচবাগা এলাকা থেকে সিপিএমের বর্নাঢ্য মিছিল শুরু হয়। মিছিলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। জেলার এক সিপিএম নেতা বলেন, “দীর্ঘ দিন পরে এত বড় মাপের মিছিল হল। এতে আমরা উজ্জীবীত।” মিছিলে তাসা পার্টি ও ঢাকের বাদ্যি ছিল। মিছিলের মাঝে হুড খোলা গাড়িতে সুর্যকান্তবাবুর সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রার্থী অমিয় পাত্র, বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুনীল খাঁ, বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া।
জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এদিনের মিছিলে ৩০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। যদিও পুলিশের দাবি, সংখ্যাটা ছিল মেরেকেটে হাজার পাঁচেক। বামফ্রন্টের এই মিছিল নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, তৃণমূল বিরোধী ভোটের বেশিরভাগই এখন বিজেপি-মুখী। মনোনয়ন পর্বে বিজেপির মিছিলও শহরের মানুষের নজর কেড়েছিল। তবে বামেদের এদিনের মিছিল জানান দিল প্রতিপক্ষ হিসেবে মোটেও তারা দুর্বল নয়।
অমিয়বাবুর অভিযোগ, “একশ্রেণির সংবাদমাধ্যম মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, সিপিএম নয়, এ রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি এখন বিজেপি। এ দিনের মিছিলে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা প্রমাণ করেছে তৃণমূলের প্রকৃত বিরোধী কারা।”
বামেদের এই মিছিলকে কটাক্ষ করে বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার বলেন, “সিপিএম এখন এতটাই অপ্রাসঙ্গিক যে, ওরা কি করল তাতে মানুষের কিছু যায় আসে না। বিজেপি-ই তৃণমূলকে টক্কর দিতে পারে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “সিপিএম ও বিজেপি রাজ্যের উন্নয়ন চায় না। ওরা যাই করুক মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন।”