গেরুয়া শিবিরে জল্পনা টিকিট কার, হাওয়ায় ভাসছে নাম

পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে এই জেলায় অন্যতম শক্তি হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে ৮৬০টি আসন পায় তৃণমূল। সেখানে বিজেপির ঝুলিতে আসে ৬৪৪টি আসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০০:২৩
Share:

বিজেপি নেতৃত্ব প্রার্থী ঘোষণা করতে যাচ্ছেন শুনলেই টানটান হয়ে টিভির সামনে বসে পড়ছেন তাঁরা। কিন্তু, তাঁদের কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম আর ঘোষণা হচ্ছে না। গত ক’দিনে একে একে আশপাশের কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হলেও বাদ থেকে গিয়েছে পুরুলিয়া কেন্দ্র। তাই প্রার্থীর নাম জানতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন পুরুলিয়ার বিজেপি কর্মীরা। সময় যত গড়াচ্ছে, সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে ততই ছড়াচ্ছে গুঞ্জন। আর তা সামাল দিতে বিজেপির জেলা নেতাদের কার্যত হিমসিম অবস্থা।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের নিরিখে এই জেলায় অন্যতম শক্তি হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে ৮৬০টি আসন পায় তৃণমূল। সেখানে বিজেপির ঝুলিতে আসে ৬৪৪টি আসন। কংগ্রেস ও সিপিএম ১৫০টি করে আসন, ফব ২৪টি ও সিপিআই ১টি আসন পায়। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের যে ক’টি আসন নিয়ে তাঁরা আশাবাদী, তার মধ্যে পুরুলিয়া কেন্দ্র অন্যতম বলে দাবি করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই কাকে দল এই কেন্দ্রের প্রার্থী করে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে অনেকদিন ধরেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই তা ডালপালা মেলেছে।

রাজ্যের একটা বড় অংশের প্রার্থী তালিকা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে। তাই মঙ্গলবার নতুন করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে যাচ্ছে শুনে, পুরুলিয়ার জেলা নেতৃত্ব ধরে নিয়েছিলেন, এ বার তাঁদের প্রার্থীর নাম জানানো হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার পুরুলিয়া কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো জয়পুর, বাঘমুণ্ডি বা বলরামপুরে প্রার্থীকে নিয়ে জনসভা করার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।’’ তিনি জানান, মঙ্গলবার শেষে তাঁরা বাঘমুণ্ডিতে কর্মিসভা করেন। কবে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে, তা নিয়ে তাই দোলাচল কাটছে না বিজেপির নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও। এই পরিস্থিতিতে দলের জেলাস্তরের কিছু নেতাও চাইছেন, প্রচারে আরও গতি আনতে দ্রুত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হোক।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিকে, দল সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুরুলিয়া কেন্দ্রে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ছয়-সাত জনের নাম ঘোরাফেরা করছে। তাঁদের মধ্যে যেমন আছেন অন্য দল থেকে বিজেপিতে আসা এক প্রাক্তন সাংসদের নাম, তেমনিই আছে এক আইনজীবী-সহ দলের এক শীর্ষ নেতা থেকে দলের একটি শাখা সংগঠনের নেতা এবং কয়েকজন জেলা সম্পাদকের নাম।

জেলা বিজেপির একটি সূত্রের খবর, প্রার্থীর নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে পুরুলিয়ার জনজাতির বিন্যাসও খতিয়ে দেখছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূল, বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের প্রার্থীরা সকলেই ‘মাহাতো’। তাই, বিজেপি মাহাতো নাকি অন্য কোনও পদবির লোককে প্রার্থী করে বাজি খেলে কি না, তা নিয়েও বিস্তর জল্পনা চলছে।

দলেরই এক জেলা সম্পাদকের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে আশাতীত সাফল্য পাওয়ার পরে পুরুলিয়ায় লোকসভা ভোটে বিজেপির জেতার সম্ভবনা ষোলো আনা। তাই প্রার্থী স্থির করতে বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রার্থী হিসাবে দলের জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে কয়েকজনের নাম যেমন রয়েছে, তেমনই আছে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের নামও।” আবার চর্চায় থাকা নেতাদের নাম বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন কাউকে প্রার্থী করে চমক দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি।

তবে প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে তাঁরা আদৌও চিন্তিত নন বলে ফের দাবি করেছেন দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রার্থীকে লক্ষাধিক ভোটে জেতানোর। সেই প্রস্তুতি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পরেই শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

এ দিন কাশীপুরে বিধানসভার বুথ কমিটির সম্মেলনে বিদ্যাসাগরবাবু দাবি করেছেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাওয়া ৩৬ শতাংশ ভোট লোকসভাতে বেড়ে ৫০ শতাংশে পৌঁছবে। আমাদের প্রার্থী পুরুলিয়াতে দুই লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জিতবেন।” তবে বিজেপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলার সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় বিজেপি প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। তারা আবার জেতার স্বপ্ন দেখছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement