সাঁইথিয়া থানায় সংবর্ধনা।
বাবা দিনমজুর। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা। তার মধ্যেও সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করে ‘ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন’-এর (আইএফএ) অনূর্ধ্ব ১৭ বাংলা দলে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেল লক্ষ্মী মুর্মু। সাঁইথিয়ার বনগ্রাম আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা লক্ষ্মী স্থানীয় দেরিয়াপুর অঞ্চল হাই স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে।
লক্ষ্মীদের অভাবের সংসার৷ বাবা মঙ্গল মুর্মু পেশায় দিনমজুর। লক্ষ্মীরা তিন বোন। মেজ আরতিও নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছবি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। বাবার দিনমজুরির আয়ে জোড়াতালি দিয়ে তিন বোনের পড়াশোনা-সহ পাঁচ সদস্যের সংসার চলে। সংসারের চাপে মাঝেমধ্যে লক্ষ্মীকেও মজুর খাটতে হয়। এর মধ্যেও সে পড়াশোনার পাশাপশি স্থানীয় ‘লর্ড বুদ্ধস্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে’ চতুর্থ শ্রেণি থেকে নিখরচায় ফুটবলে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
লক্ষ্মী জানায়, বাংলা দলে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য জেলা থেকে সাত জন বহরমপুর স্টেডিয়ামে প্রাথমিক ট্রায়ালে যোগ দেয়। চূড়ান্ত ট্রায়ালে নির্বাচিত হয় সিউড়ির নগরী হাই স্কুলের ছাত্রী জয়তী হাঁসদা এবং লক্ষ্মী। ২৫ জুলাই কলকাতায় চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালে বাংলা দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায় লক্ষ্মী। ওই খবরে এলাকায় বইছে খুশির হাওয়া।
শুক্রবার লক্ষ্মীকে সাঁইথিয়া থানা এবং দেরিয়াপুর হাই স্কুলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয়। তার হাতে তুলে দেওয়ায় খেলার সরঞ্জাম-সহবিভিন্ন সামগ্রী। অ্যাকাডেমি’র কোচ বুদ্ধদেব চৌধুরী, উল্লাস দাস এবং সভাপতি সঞ্জয় মুর্মু জানান, লক্ষ্মী তাঁদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ওর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেছেন তাঁরা।
লক্ষ্মীর বাবা সব কৃতিত্ব অ্যাকাডেমিকেই দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অ্যাকাডেমি পাশে ছিল বলেই লক্ষ্মী খেলা চালিয়ে যেতে পেরেছে। না হলে এই সাফল্যের মুখ দেখা হত না।’’ আর লক্ষ্মী বলে, ‘‘সুযোগ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছেন। উৎসাহ দিচ্ছেন। আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পাচ্ছি।’’