বছর পেরিয়ে খুলল খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়া কল্যাণসঙ্ঘ লাইব্রেরি। সম্প্রতি সেখানে কর্মী যোগ দিয়েছেন।
বইয়ের যথেষ্ট ভাল সম্ভার, ৬০০-রও বেশি নিয়মিত সদস্য থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র কর্মীর অভাবে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই বন্ধ ছিল সরকার পোষিত খয়রাশোলের ওই গ্রন্থাগারটি। এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল, কেন একটি মূল্যবান সম্পদ এ ভাবে নষ্ট হবে। কেন গ্রন্থাগার থাকা সত্ত্বেও এলাকার পড়ুয়া এবং সাহিত্যপ্রেমী মানুষজন বঞ্চিত হবেন। অবিলম্বে বিষয়টিতে নজর দিক সরকার। গত ডিসেম্বরে আনন্দবাজারে খবরটি প্রকাশিত হলে গ্রন্থাগারটি খোলার ব্যবস্থা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলা গ্রান্থাগারিক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা রাখলেন তিনি।
জেলা গ্রন্থাগার সূত্রের খবর, গত ২০ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ শ্রেণির কর্মীপদে যোগ দেন শ্রীপর্ণা নন্দী। পরের দিনই তাঁকে খয়রাশোলের ওই গ্রন্থাগারের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। ভাষা দিবসের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি থেকেই নিয়মিত খুলছে গ্রন্থাগারটি।
কেন্দ্রগড়িয়া গ্রামে ওই গ্রন্থাগারটি তৈরি হয় ১৯৪৭ সালে। সেই সময় দায়িত্বে ছিল স্থানীয় ক্লাব কল্যাণসঙ্ঘ। বাম আমলে ১৯৭৮ সালে গ্রন্থাগারটি সরকার পোষিত হয়। কেন্দ্রগড়িয়া ও পড়শি হজরতপুর দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার কমপক্ষে ২০টি গ্রামের মানুষের বইয়ের প্রয়োজন মেটাত ওই গ্রন্থাগার। কাছের উচ্চমাধ্যমিক স্কুলপড়ুয়া, কিংবা চকুরির পরীক্ষার্থীরাও উপকৃত হতেন ওই গ্রন্থাগার থেকে। কিন্তু গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থাগারিক শচীন চক্রবর্তী অবসর নেওয়ার পর থেকেই তা খোলার লোক ছিল না। চরম অসুবিধায় পড়েছিলেন সকলে। বই কাটছিল উইপোকা, ইঁদুরে।
গ্রামের সমরেশ মণ্ডল, সুভাষ ঘোষ কিংবা চাকুরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে প্রতিনিয়ত ওই গ্রন্থাগারের উপর নির্ভরশীল পূর্বা ঘোষ, দীপা চৌধুরী এবং পিয়ালি মণ্ডলেরা জানিয়েছিলেন, লাইব্রেরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অসুবিধার কথা। বর্তমানে লাইব্রেরি খোলায় খুশি তাঁরা। শ্রীপর্ণাদেবী অবশ্য গ্রন্থাগারিক বা জুনিয়র গ্রন্থাগারিক নন। কীভাবে কাজ চালাতে হয়, এখনও সড়গড় নন। তাতে আপত্তি নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। গ্রাহকেরা বলছেন, ‘‘গ্রন্থাগারিক না থাক। লাইব্রেরি খোলা থাকলেই কাজ চলবে। আমরা তো শুধু এটুকুই চেয়েছিলাম।’’ মুশকিল আসান করতে অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক শচীনবাবু এসে কাজ দেখিয়ে দিচ্ছেন শ্রীপর্ণাদেবীকে।