রাখি তৈরি করে পরাল কন্যাশ্রীরা

রাখিবন্ধন উৎসবে দুই জেলার আরও নানা জায়গায় অনুষ্ঠান হয়েছে সোমবার। নিতুড়িয়া ব্লকের সবলা-কন্যাশ্রী প্রকল্পের কিশোরী ফানা পারভিন,নিখত পারভিনরা নিজেরাই রাখি তৈরি করে হাসপাতাল ও ব্লক কার্যালয়ে গিয়ে কর্মীদের হাতে বেঁধে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০৮:০০
Share:

বন্ধন: (বাঁ দিকে) মণিপুর হোমে। (ডান দিকে) পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

রাখির দিনটার জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকে মণিপুর গ্রামের অরুণোদয় শিশু নিকেতনের আবাসিকেরা। এ বছরও হৈ-হুল্লড়ে দিনটা কাটল তাদের। আনন্দে সামিল হয়েছিলেন জেলা আইনী পরিষেবা কর্তৃপক্ষরে সদস্য সচিব সুরজিৎ মণ্ডল, বিডিও (রঘুনাথপুর ১) অনির্বাণ মণ্ডল, আদ্রা থানার ওসি মুকুল কর্মকার এবং স্থানীয় আড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান মধুসূদন দাসও।

Advertisement

আদ্রার উপকণ্ঠে মণিপুর গ্রামের এই হোমের আবাসিকদের মধ্যে অনেকেই কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত পরিবার থেকে এসেছে। অনেকে অনাথ। হোমের সম্পাদক নবকুমার দাস জানান, পরিবার থেকে আলাদা হয়ে থাকা ছোটছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে এই দিনটার আনন্দের ভাগ এনে দিতেই প্রতিবছর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ দিন শঙ্কর, প্রিন্স, সুনীলদের মতো দেড়শো ভাই এর হাতে রাখি বেঁধেছে প্রীতি সাউ, নমিতা হেমব্রম, পলি সাউদের মতো প্রায় পঞ্চাশ জন বোন।

রাখিবন্ধন উৎসবে দুই জেলার আরও নানা জায়গায় অনুষ্ঠান হয়েছে সোমবার। নিতুড়িয়া ব্লকের সবলা-কন্যাশ্রী প্রকল্পের কিশোরী ফানা পারভিন,নিখত পারভিনরা নিজেরাই রাখি তৈরি করে হাসপাতাল ও ব্লক কার্যালয়ে গিয়ে কর্মীদের হাতে বেঁধে দিয়েছে। তারা জানায়, চব্বিশ জন মিলে ঠিক করেছিল, নিজেরাই রাখি তৈরি করবে। ব্লকের প্রকল্প কো-অর্ডিনিটার জগদীশ চক্রবর্তীকে জানাতেই তিনি রাজি হয়ে যান।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলা যুব আবাসে জেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উত্তমকুমার অধিকারী ও জেলা যুব দফতরের আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুষেণচন্দ্র মাঝি, জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি মীরা বাউড়ি, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুশান্ত মাহাতো প্রমুখ। বলরামপুরে স্থানীয় সাংস্কৃতিক মঞ্চ ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে পুরুলিয়া-জামশেদপুর জাতীয় সড়কে চকবাজার মোড়ে রাখি বন্ধন করা হয় বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে দীপক মহান্তি জানান। সেখানে পথ নিরাপত্তার প্রচারে পুলিশের পক্ষ থেকে হেলমেট দেওয়া হয়। পুরুলিয়ার নডিহা এলাকায় শহর মহিলা তৃণমূলের উদ্যোগে রাখি বন্ধন হয়েছে।

সোমবার মানবাজারের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড চত্বরে একটি অনুষ্ঠানে পথচারী ও মোটরবাইক আরোহীদের রাখি পরানো হয়। মানবাজার গার্লস হাইস্কুল ও স্বপন সুব্রত হাইস্কুলের ছাত্রীদের সামনে রাখিবন্ধন উৎসবের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন মানবাজার মহকুমা অফিসের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৃদুল শ্রীমানি। উপস্থিত ছিলেন মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মাহাতো, বিডিও নিলাদ্রী সরকার, সঙ্গীতজ্ঞ গোরাচাঁদ নারায়ণ দেব প্রমুখ।

বাঁকুড়ার মাচানতলায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠানেউপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী প্রমুখ। বাঁকুড়া সদর থানার উদ্যোগে পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরার উপস্থিতিতে রাখি বন্ধনের অনুষ্ঠানে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ কর্মসূচির প্রচারও করা হয়েছে। বাঁকুড়ার কিছু আইনজীবীর উদ্যোগে বাঁকুড়া সংশোধনাগারে বন্দিদের রাখি পরানো হয়। পরে শহরের ইদগা মহল্লাতেও সম্প্রীতির রাখি বন্ধন পালন করেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এ জুনবেদিয়া মোড়ে উৎসব পালন করা হয়।

ভগত সিং মোড়ে ‘একতার রাখি বন্ধন উৎসব’ পালন করে বিষ্ণুপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস। উপস্থিত ছিলেন বিষ্ণুপুরের উপ-পুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধায়। বিষ্ণুপুর থানার উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রায় পা মেলান বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য, এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস, আইসি (বিষ্ণুপুর) আস্তিক মুখোপাধায়। শহরে রবীন্দ্র মূর্তির সামনে পুরসভা এবং পুর যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠান হয়। সেখানে ছিলেন বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়। সোনামুখী শহরে যুব তৃনমূল সভাপতি বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় কচিকাঁচাদের নিয়ে শোভাযাত্রা করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement