পুণ্যার্থী: মকর-স্নানের জন্য ভিড়। শনিবার জয়দেবে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
মকরস্নানের ঠিক আগের দিন কেঁদুলির পথে যে কোনও রাস্তার দিকে তাকালেই যে দৃশ্য চোখে পড়ে, তা হল অসংখ্য মানুষের চলমান স্রোত। উদ্দেশ্য কেঁদুলি ঘেঁষা অজয়ে মকরস্নান সেরে শতাব্দী প্রাচীন রাধাবিনোদ মন্দিরে পুজো দেওয়া। তিন দিনের জয়দেব, কেঁদুলি মেলায় আখড়ায় আখাড়ায় ও কীর্তন বাউলের সুরে মেতে ওঠা তো আছেই।
শনিবার বিকেলে চিরাচরিত সেই ছবিই ধরা পড়ল। রবিবার সকালেই মকর সংক্রান্তির পূণ্যস্নান সেরে ফেলবেন লক্ষাধিক পূণ্যার্থী। অজয়ে এ বার জল থাকায় কী ভাবে পূণ্যস্নান করবেন, সেই দুঃশ্চিন্তা কমেছে পূণ্যার্থীদের। গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ মানুষের ভিড় সামলাতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। জয়দেব মেলায় আগত মানুষের ভিড় সামাল দিতে অস্থায়ী আখড়া সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অজয়ের চরে। জয়দেব ঢোকার আগে টিকরবেতা গ্রাম থেকে জয়দেবের রাধাবিনোদ মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে কম পক্ষে হাজার খানেক স্টল থাকে।
গত তিন বছর যাবত মূল রাস্তার দু’পাশে একটিও দোকান বসতে দেয়নি প্রশাসন। যা স্টল বসেছে তা সবই অজয়ের চরে। রাস্তায় যাতে কোনও দোকান বা স্টল না বসে সেটা নিশ্চিত করতেই কয়েক হাত অন্তর খুঁটি পুঁতে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। এতে খানিকটা বিব্রত স্থানীয় স্থায়ী ব্যবসায়ীরা।
আরও একটি বিষয়ে জোর দিয়েছে প্রশাসন। তা হল, কিছু দিনের মধ্যেই নির্মল জেলা হবে বীরভূম। শতাব্দী প্রাচীন জয়দেব মেলার থিম এ বার ‘নির্মল জয়দেব মেলা’। শুধু থিমে আটকে থাকা নয়। বাস্তবে সেটা করে দেখাতে প্রশাসন ও স্থানীয় পঞ্চায়েত কোমর বেঁধেছে। পর্যান্ত শৌচাগার বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেজা কাপড় ছেড়ে শুকনো কাপড় পড়ার জন্যও ঘেরাটোপ করা হয়েছে। যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা দেখতে প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ কর্মী অজয় নদের দুই তীরে মোতায়েন করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে ৫৫টি সিসিটিভি ক্যামেরা। শনিবার দুপুর থেকেই আকাশে উড়ছে ড্রো ন ক্যামেরা। শয়ে শয়ে আখড়া ও ভক্তিভবনে নানা অনুষ্ঠান তিন দিন নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চলতে থাকলেও মূল মেলার সূচনা হবে আজ, রবিবার দুপুর দু’টোয় জয়দেবের বাউল মঞ্চে। যার সূচনা করবেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।