প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল জয়দেব মেলার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
প্রথা মেনে অজয়ের কোলে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে শতাব্দী প্রাচীন জয়দেব কেন্দুলি মেলা। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলার উদ্বোধন করার কথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। বুধবার মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে পুণ্যস্নানের ঢল নামবে ধরে নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
এ বছর মেলা শুরু হবে ১৪ জানুয়ারি। চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বেশ কয়েক
দিন ভাঙা মেলা থাকবে। ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলির অন্যতম জয়দেব কেন্দুলির মেলা। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ বাউল ফকির গানের টানে এখানে আসেন। কবি জয়দেবের তিরোধান দিবসকে সামনে রেখে এই মেলার সূচনা করেন নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের মহান্তরা। সেই থেকে চলে আসছে মেলা।
গত কয়েক বছরে এই মেলাকে সম্পূর্ণ প্লাস্টিক মুক্ত করার চেষ্টা হয়েছে। এ বছরও প্লাস্টিক মুক্ত মেলা হিসেবে ঘোষণা করা
হয়েছে। মেলার নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে কুড়িটিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা। নজরদারি চালানোর জন্য ১১টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৯০ জন অফিসার, ২৫০ জন কনস্টেবল, ১৪৫০ মতো সিভিক ভলান্টিয়ারকে। মেলায় ইভটিজিং সহ নানা অপরাধ আটকাতে চারটি অ্যান্টি ক্রাইম টিম ও সাদা পোশাকের পুলিশের বিশেষ দলকে রাখা হয়েছে। মোটর সাইকেল ও মোবাইল ভ্যান থাকছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ১৭টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
মেলায় সাধুদের ২৫০টি আখড়া বসেছে। ৫০০টিরও বেশি স্টল বসানো হয়েছে। বুধবার মকরের পুণ্যস্নানের জন্য নদীর তিনটি ঘাট তৈরি করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। স্নান করতে এসে যাতে কোনও ভাবেই দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন থাকছে। ৬ জন ডুবুরি রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬০০টিরও বেশি অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে ২০০ জন সাফাই কর্মীকেও। সোমবার মেলা পরিদর্শনে আসেন পশ্চিমাঞ্চল আইজি বি.এল মিনা, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ সহ পুলিশ কর্তারা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন।
সোমবার সন্ধ্যা থেকেই মেলার বিভিন্ন আখড়ায় দেশ-বিদেশ থেকে সাধুরা আসর জমাতে শুরু করেছেন। চলছে গান বাজনা। বিডিও (ইলামবাজার) মহম্মদ জসিমউদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে জয়দেব কেন্দুলি মেলা। মেলা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুত।’’