—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও দগদগে। তার মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে রামপুরহাটে ট্রেন বিভ্রাটে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। রেল সূত্রে খবর, জয়নগরগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন চালকদের ভুলে লাল সিগন্যাল পেরিয়ে দুমকা যাওয়ার লাইনে ঢুকে পড়েছিল। এতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিল বলেও দাবি।
মঙ্গলবার রাতে রামপুরহাট স্টেশনে হাওড়া-জয়নগর এক্সপ্রেস সিগন্যাল পেরিয়ে এগিয়ে গিয়েও পিছিয়ে আসে। ট্রেন থেকে নেমে বিক্ষোভ দেখান আতঙ্কিত যাত্রীরা। ট্রেনের দুই চালককে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রেল সূত্রে খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে চালকদের ভুলেই ওই ঘটনা ঘটে।
রেল সূত্রে খবর, একটি মালগাড়িকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য জয়নগর এক্সপ্রেসকে থামাতে লাল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। মালগাড়িটি সাদিনপুর স্টেশন পৌঁছনোর পরে জয়নগর এক্সপ্রেসকে ছাড়া হতো। কিন্তু জয়নগর এক্সপ্রেসের ট্রেনের চালকেরা নিজেদের ভুলেই লাল সিগন্যাল অতিক্রম করে রামপুরহাট দুমকা লাইনে চলে যান বলে রেল সূত্রে দাবি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাট দুমকা লাইনে জয়নগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন পৌঁছতেই রেলের প্যানেল স্বয়ংক্রিয় ভাবে লাল হয়ে যায়। তখন জয়নগর এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড ব্রেক কষে চালকদের ওয়াকিটকিতে সতর্ক করেন। চালকদের সতর্ক করতেই জয়নগর এক্সপ্রেস ট্রেনের সহকারি চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে ট্রেনটিকে থামান। ততক্ষণে ট্রেনটির ইঞ্জিন দুমকা লাইনে ঢুকে পড়েছিল বলে রেল সূত্রে জানা যায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পরে চালকদের নামিয়ে রেল অন্য চালকদের দিয়ে ট্রেনটি চালু করা হয়। ইতিমধ্যে যাত্রীরা বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। ততক্ষণে প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরি হয়ে যায়। লাল সিগন্যাল থাকা সত্ত্বেও জয়নগর এক্সপ্রেসের চালক কী ভাবে সিগন্যাল অতিক্রম করে অন্য লাইনে ঢুকে পড়েছিলেন সে ব্যপারে রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা মঙ্গলবার রাতেই তদন্ত শুরু করেছেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ডিভিশনের অতিরিক্ত ডিভিশনাল ম্যানেজার বিনোদকুমার পাসোয়ান-সহ সিনিয়র ডিভিশনাল ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র, সিনিয়র ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়র, অ্যাসিট্যান্ট অপারেশন ম্যানেজারের (সেফটি) মতো উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ঘটনার তদন্ত করেন। তাদের সঙ্গে রামপুরহাট রেল স্টেশনের এরিয়া অফিসার, সহকারী ইঞ্জিনিয়র, স্টেশন ম্যানেজারও ছিলেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে হাওড়া জয়নগর এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ হেড কোয়ার্টারের দুই চালক ছিলেন। দু’জনেরই মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে এবং তাঁদেরে রামপুরহাটে চালকদের রানিং রুমে রাখা হয়েছে। সিগন্যাল না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা কেন এমন করলেন তা জানতে তদন্ত হচ্ছে বলেও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।