পসরা সাজিয়ে।—নিজস্ব চিত্র।
সবলা মেলার উদ্বোধনেই মন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতির একটি মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক বাধল।
পুরুলিয়ার সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বুধবার জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মাঠে শুরু হওয়া জেলা সবলা মেলার উদ্বোধনী মঞ্চে বলে ওঠেন, ‘‘জেলা স্তরের মেলা। কিন্তু আয়োজন এমন ম্যাড়ম্যাড়ে কেন?’’ মঞ্চে তখন স্বনির্ভর গোষ্ঠী মন্ত্রী সাধন পান্ডে, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী প্রমুখ বসে। সভাধিপতি অবশ্য বলে চলেন, ‘‘কলকাতা থেকে দফতরের মন্ত্রী এতদূরে ছুটে এসেছেন। তারপর যদি এই অবস্থা দেখেন, তাহলে বোঝাই যায় সারা বছর কী কাজ হচ্ছে। ব্যাপারটা এই রকম, মেলা করতে হবে বলে করা হচ্ছে।’’ তাঁর পরামর্শ, দফতরের একটা মনিটরিং টিম করা উচিত। তাঁরা দেখবেন কী ভাবে এই কাজ করা যায়। তখন দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়ে যান মঞ্চে উপস্থিত অনেকেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে অনুষ্ঠানের ঘোষিকাকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘সভাধিপতি আমাদের বেশ কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিলেন। নিশ্চয়ই তাঁর পরামর্শ আমরা মাথায় রাখব।’’
যদিও সাধনবাবু এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া— ‘‘আমি একমত নই।’’
স্বনির্ভর গোষ্ঠী দফতরের এক আধিকারিকেরও দাবি, ‘‘উদ্বোধনের সময় মেলা চত্বরে ভালই লোক ছিল। জেলার বিভিন্ন এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা তাঁদের হাতে তৈরি নানা সামগ্রী নিয়ে এসেছিলেন। প্রচারও যথেষ্ট করা হয়েছে। সাতদিন ধরে মেলা চলবে। অন্যবারের মতো এ বারও আশাকরি বহু লোক কেনাকাটি করতে আসবেন।’’
বস্তুত সৃষ্টিধরবাবুর এমন মন্তব্য জেলায় নতুন নয়। তিনি বন দফতরের অনুষ্ঠানেও বন দফতরের কাজের কড়া সমালোচনা করেছেন ইতিপূর্বে। কৃষি দফতরের অনুষ্ঠানে গিয়েও তাঁকে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। দলের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘সৃষ্টিধরের অভিযোগগুলির অনেকক্ষেত্রে সারবত্তা থাকলেও অনেক সময় অতিরঞ্জিতও হয়। আর প্রকাশ্যে এ সব বলায় দলের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয় না। মনে রাখতে হবে, সরকারটা তৃণমূলের। আর সৃষ্টিধর এই সরকারেরই একজন প্রতিনিধি।’’ দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে, ওই মেলায় আমন্ত্রণপত্রে বিরোধী কংগ্রেস বিধায়কদের নাম না থাকায় রুষ্ট তাঁরা।