নিজস্ব চিত্র
স্কুল চলাকালীন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ল একের পর এক ছাত্রী। তাদের সকলের অসুস্থতার ধরনও এক। শরীরে চরম অস্বস্তি, বমি বমি ভাব। কারও আবার মাথাঘোরা আর শ্বাসকষ্ট। এমন উপসর্গ দেখে ১০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিষ্ণুপুরের মুনিনগর রাধাকান্ত বিদ্যাপীঠে। স্কুলের অসুস্থ ছাত্রীদের ভর্তি করানো হয়েছে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু কী কারণ হঠাৎ করে এত জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
স্কুল সূত্রে খবর, রোজকার মতোই প্রার্থনা শেষে স্কুলের ক্লাস শুরু হয়েছিল নির্ধারিত সময়। ক্লাস চলাকালীন দুপুরের দিকে আচমকাই ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে। তা জানার পরেই ওই ছাত্রীকে ক্লাসরুম থেকে তড়িঘড়ি স্কুলে শিক্ষকদের বসার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুল থেকে ছাত্রীর অভিভাবককে খবর দেওয়ার পাশাপাশি তলব করা হয় স্থানীয় চিকিৎসককে। স্কুলে ওই ছাত্রীর প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে রাধানগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। এ দিকে ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই সপ্তম, নবম ও দশম শ্রেণির একের পর এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়েছে খবর স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে। এদের মধ্যে কয়েক জন বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়েছে। তবে উপসর্গের ধরন প্রত্যেকের এক— মাথাঘোরা, বমিভাব। ওই পড়ুয়াদেরও বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সপ্তম শ্রেণির অসুস্থ ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা রায় বলেন, “স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় আমার অস্বস্তি শুরু হয়। বমি পাচ্ছিল ভীষণ। বাড়ি গিয়ে বাবা, মাকে বলতে আমায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।’’ অবশ্য স্কুলে সহশিক্ষক পিন্টু মুকুটি বলেন, “প্রথম যে ছাত্রী অসুস্থ হয়েছিল, তাকে স্কুলে চিকিৎসা করানো ও পরে গাড়ি ডেকে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর গোটা ঘটনা ছাত্রীরা দেখেছে। ওই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়েই হয়তো একের পর এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে আমাদের ধারণা।”
হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, “এখনও পর্যন্ত দশ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। কী কারণে এটা ঘটল, বলা কঠিন। চিকিৎসকেরা দেখছেন। রোদে থাকার পর জল খেয়ে এটা হয়েছে কি না, সেটা দেখা হচ্ছে।” এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের বিডিও শতদল দত্ত। তিনি বলেন, “অসুস্থ ছাত্রীদের শারীরিক অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল। ছাত্রীরা সুস্থ হয়ে ওঠার পর তাদের সঙ্গে কথা বলে কারণ জানার চেষ্টা করা হবে।”