ঠাঁই নেই হোটেলে, ভরসা বাড়ি

দেশ-কাল-সময়ের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক উৎসবের পরিচয় পেয়েছে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব। তাতে সামিল হতে দেশ-বিদেশের মানুষ ভিড় করেন শান্তিনিকেতনে। দু-তিন মাস আগে থেকেই বসন্ত উৎসবের জন্য শান্তিনিকেতন ও বোলপুরের হোটেল, লজ ভাড়া দেওয়া শুরু হয়।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০২:২৫
Share:

বসন্ত উৎসবে রঙিন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

দেশ-কাল-সময়ের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক উৎসবের পরিচয় পেয়েছে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব। তাতে সামিল হতে দেশ-বিদেশের মানুষ ভিড় করেন শান্তিনিকেতনে। দু-তিন মাস আগে থেকেই বসন্ত উৎসবের জন্য শান্তিনিকেতন ও বোলপুরের হোটেল, লজ ভাড়া দেওয়া শুরু হয়। সময়ে বদলেছে ভাড়া দেওয়ার পদ্ধতিও। অনেক হোটেল, লজ এখন অনলাইনেই বুকিং করা যায়।

Advertisement

শেষ মুহূর্তে তা-ই কার্যত নেই নেই রব বোলপুরে। হোটেল, লজগুলিতে ঠাঁই না থাকার সুযোগে ফাঁকা থাকা ঘর পর্যটকেদের ভাড়া দিচ্ছেন অনেক বাড়িমালিক। উৎসবের একসপ্তাহ আগে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে সে কথা— ‘দোলের জন্য ঘর ভাড়া পাওয়া যাবে।’ তাতে রয়েছে ঠিকানা, ফোন নম্বর। বোলপুর-শান্তিনিকেতনের অনেক দেওয়াল বা বিদ্যুৎস্তম্ভেও নজরে পড়ে তেমন বিজ্ঞাপন।

চার-পাঁচ বছর আগে এমন ছবি ছিল না। শহরে হাতেগোণা কয়েকটি বাড়িই ভাড়ায় মিলত। লজ, হোটেলে ভাড়া না পেয়ে দোলের আগের রাত স্টেশনে কাটিয়ে দিতেন অনেকে। স্টেশনের খাবার স্টলের বিক্রেতাদের কয়েক জন বলেন, ‘‘আগে সারা রাত ভিড় থাকত স্টেশনে। স্টেশনেই গল্প, গান করতেন পর্যটকেরা। একটু ভোর হতেই সবাই বেড়িয়ে পড়তেন আশ্রম মাঠের দিকে।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখন অনেকেই সারা রাত গাড়ি চালিয়ে বোলপুরে পৌঁছন। সকালে বসন্ত উৎসবে সামিল হয়ে বিকেলের দিকে ফিরে যান।

Advertisement

শান্তিনিকেতন দক্ষিণ গুরুপল্লির একটি বাড়িতে গতবছর সপরিবার এসে থেকেছেন হাবড়ার মণিশঙ্কর রায়। গত বছর শেষ মুহূর্তে বাড়ি ভাড়ার খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। সে বছরই বাড়ির মালিকের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে বলে গিয়েছিলেন, ২০১৮ সালের বসন্ত উৎসবেও আসবেন সেই বাড়িতেই। বুধবার তাঁরা ফের এসেছেন গুরুপল্লির সেই বাড়িতে। সন্ধেয় দেখেছেন সঙ্গীতভবনের পালা ‘নবীন’ও। একই ভাবে উত্তরপাড়া থেকে এ বছর এসেছেন লাবণ্য আচার্য ও তাঁর পরিবার। এ বছরই প্রথম এসে উঠেছেন ভাড়া বাড়িতে। তিনি জানালেন, অনেক বছর রাত বোলপুর স্টেশনে কাটিয়েছেন। সকাল থেকে অনুষ্ঠান হয়, আগে থেকে না পৌঁছতে পারলে মঞ্চের কিছুই দেখা যায় না। আগের দিন রাত কাটানো নিয়েই সমস্যা হত। সেই সমস্যা মিটেছে এ বছর। বোলপুর আর শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের একাংশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটকেরা। তবুও প্রশ্ন একটা থেকেই যাচ্ছে। বাড়ি যখন ভাড়া দিচ্ছেন তখন বাড়িওয়ালারা আদেও পরিচয়পত্র দেখছেন কি? কোনও কারণে যদি কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে দায় কে নেবেন? তবে এব্যাপারে বাড়ির মালিকদের বক্তব্য, এটা নতুন কিছুই নয়। আগেও এরকম বাড়ি ভাড়া পাওয়া যেত। পার্থক্য একটাই, এখন অনেক শহরবাসী এটা করছেন। প্রয়োজনীয় সবকিছু দেখে নিয়ে তার পরই বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়। এমনকী কিছু কিছু বাড়িতে নিয়মও থাকে কয়েকটা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement