Higher Secondary Exam 2024

অভাবের আঁধার ঠেলে উজ্জ্বল জ্যোৎস্না

বুধবার দুপুরে জ্যোৎস্নার সাফল্যের খবর মিলতেই খুশির ঝলক বয়ে যায় সারেঙ্গা ব্লকের কাঠগড়া গ্রামে জ্যোৎস্নাদের এক টুকরো ঘরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাইপুর শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৪ ০৯:১৭
Share:

জ্যোৎস্না কিস্কু। নিজস্ব চিত্র

বাবা-মা দিনমজুর। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের সেই মেয়ে এ বারে উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালি মাধ্যমে রাজ্যে প্রথম হয়ে নজর কাড়ল। বাঁকুড়ার রাইপুরের চাতরি পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী জ্যোৎস্না কিস্কুর প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬। জ্যোৎস্নার পাশাপাশি নজরে স্কুলের প্রদর্শনও। এই নিয়ে পাঁচ বার স্কুলের পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে সেরা হলেন। গত বছরেও স্কুলের পড়ুয়া বিবেক সরেন উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালি মাধ্যমে রাজ্যে প্রথম হয়েছিলেন।

Advertisement

বুধবার দুপুরে জ্যোৎস্নার সাফল্যের খবর মিলতেই খুশির ঝলক বয়ে যায় সারেঙ্গা ব্লকের কাঠগড়া গ্রামে জ্যোৎস্নাদের এক টুকরো ঘরে। সেখানে ছুটে যান রাইপুরের বিধায়ক মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু। জ্যোৎস্না জানান, তাঁরা দুই ভাই-বোন। দাদা সারেঙ্গার পরিলগাড়ি কলেজে পড়াশোনা করেন। পঞ্চম শ্রেণি থেকেই ওই আবাসিক বিদ্যালয়ে থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। তিনি জানান, স্কুল ও স্কুলের কোচিংয়ের বাইরে পড়াশোনার বাঁধাধরা কোনও নিয়ম ছিল না। সব মিলিয়ে পাঁচ-সাত ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। কোনও টিউশন ছিল না। তাঁর কথায়, “ভাল ফল হবে আশা করেছিলাম। কিন্তু একেবারে প্রথম হব, ভাবিনি। সাঁওতালি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হতে চাই।”

শিক্ষক-নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতেও শিক্ষিকা হতে চান? জ্যোৎস্না বলেন, “সাঁওতালি মাধ্যমে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তাই শিক্ষকতার পেশায় আসতে চাই। যোগ্য হলে সমস্যা হবে না আশা করি।”

Advertisement

স্কুলের সাফল্য নিয়ে প্রধান শিক্ষক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকা অত্যন্ত যত্ন নিয়ে পড়ুয়াদের পড়ান। আসলে পড়ুয়ারা প্রায় সকলেই দিনমজুর পরিবার থেকে আসে। স্কুলের পড়াশোনা, স্কুলের উদ্যোগে হওয়া কোচিংয়ের বাইরে টিউশন দেওয়ার মতো পারিবারিক অবস্থা কারও নেই। তাই বছরভর পড়ুয়াদের আগলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্যে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তোলা হয়। তাতেই মিলছে সাফল্য। ২০১৫, ২০১৯-র পরে গত তিন বছর ধরে উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালিতে রাজ্যে প্রথম স্থান হয়েছে এই স্কুলের পড়ুয়াই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement