প্রকাশ্যে: বাঁকুড়ার কলেজ মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র ।
এ যেন ধরে আনতে বলায় বেঁধে আনা হল। হেলমেট না পরায় বাঁকুড়া জেলা সদরের রাস্তায় প্রকাশ্যে এক পুরকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট পুরবাসীদের অনেকেই।
হেলমেট পরা নিয়ে কড়াকড়ি করার অভিযোগ অবশ্য বাঁকুড়া জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে। সম্প্রতি তালড্যাংরা মোড়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এক মোটরবাইক আরোহীকে মারধরের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাতেও যে কিছু পুলিশের মধ্যে ‘বেঁধে আনার প্রবণতা’ ঠেকানো যায়নি, মঙ্গলবার দুপুরে বাঁকুড়ার কলেজ মোড়ে সেটাই দেখা গেল। হেলমেট বিহীন এক মোটরবাইক আরোহীকে হেলমেট না পরায় ‘শিক্ষা দিতে’ থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠল পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। পথচলতি মানুষজন অনেকেই সেই ছবি মোবাইলের ক্যামেরায় ধরে রাখেন।
পুলিশের কাছে হেনস্থা হওয়া ওই ব্যক্তি গৌতম মাহালি বাঁকুড়া পুরসভার চতুর্থশ্রেণির কর্মী। তিনি জানান, পুরসভা থেকে একটি ব্যক্তিগত কাজে কলেজ মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর দাবি, তাঁর সঙ্গে হেলমেট থাকলেও গরমে কারণে তা মাথায় না পরে মোটরবাইকে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। কলেজ মোড় পার হওয়ার সময়ই মাথায় হেলমেট না দেখতে পেয়ে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা তাঁর মোটরবাইকটি রাস্তার পাশে থামান। এরপর ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে বসে থাকা এক পুলিশ আধিকারিকের কাছে গিয়ে জরিমানা দিয়ে আসতে বলেন। গৌতমবাবু বলেন, “ওই পুলিশ আধিকারিকের কাছে যাওয়ার জন্যই আমি মোটরবাইকটি স্টার্ট করি। সঙ্গে সঙ্গে এক পুলিশ কর্মী মোটরবাইকটি পিছন থেকে ধরে টান মারেন। এতে আমি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যাই। আমি প্রতিবাদ করি। তখন ওই পুলিশ কর্মী আমার গালে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন। কলার ধরে আমাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
ঘটনাটি দেখেই আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যান। উত্তেজনা ছড়াতে পারে দেখেই আরও কিছু পুলিশ কর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে এসে লোকজনদের হটিয়ে দেন। গৌতমবাবুকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। গৌতমবাবু বলেন, “রাস্তায় গাড়ি চালানোর নিয়ম ভাঙলে পুলিশ কর্মীরা আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু মারধর করার অধিকার নেই।’’ সন্ধ্যায় তিনি বাঁকুড়া সদর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন।
বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “হেলমেট পরেই মোটরবাইক চালানোই নিয়ম। পুলিশ সেইটুকুই করতে চাইছে। এর আগে কোথাও কাউকে পুলিশ মারধর করেছে বলে শুনিনি। গৌতমের সঙ্গে কথা বলেই ঘটনাটি নিয়ে কিছু বলতে পারব।” বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “ঘটনাটি জানা নেই। কী হয়েছে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”