হুড়ার মাগুড়িয়ায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের।—নিজস্ব চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসের দিন স্কুলের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বালি আনতে যাওয়া ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক প্রধান শিক্ষকের। দুর্ঘটনাস্থল সেই বিষ্ণুপুর লাগোয়া জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে, জয়কৃষ্ণপুর-নবান্দা রাস্তায়। পুলিশ জানায়, মৃত বিশ্বনাথ মণ্ডলের (৫৭) বাড়ি বিষ্ণুপুর শহরের তিলবাড়ি এলাকায়। তিনি অযোধ্যা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বিশ্বনাথবাবু স্কুটারে স্কুলে যাওয়ার সময় দ্বারকেশ্বর নদ থেকে বালি তুলতে যাওয়া একটি ট্রাক তাঁকে ধাক্কা মারে। প্রতিবাদে কিছুক্ষণ পথঅবরোধ করেন গ্রামবাসী। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, সারা দিনে ওই রাস্তায় প্রায় এক হাজার বালির গাড়ি চলাচল করে। ফলে, রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রীরাও হেঁটে বা সাইকেলে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। রাস্তা সারানোর দাবিতে আগেও অবরোধ হয়। কিছুদিন আগে ওই রাস্তাতেই একটি বালি-গাড়ির ধাক্কায় এক পঞ্চায়েত কর্মীর মৃত্যু হয়।
এ দিকে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে ভেঙে পড়ে অযোধ্যা হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও সহকর্মীরা। ওই স্কুলের শিক্ষক জগন্নাথ দাশগুপ্ত বলেন, “দুপুরে দেহটি বিষ্ণুপুর হাসপাতালের মর্গ থেকে স্কুলে নিয়ে আসা হয়। মালা দিয়ে শোকজ্ঞাপন করা হয়। আকস্মিক এই ঘটনায় সংক্ষিপ্ত করা হয় স্কুলে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান কর্মসূচি।” স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, বালি বহনকারী অতিরিক্ত সংখ্যায় লরি চলাচলে রাস্তাটি একেবারে মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বারবার দুর্ঘটনার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে চিন্তা আরও বাড়বে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
অযোধ্যা লাগোয়া জয়কৃষ্ণপুর, ধরাপাট গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “রাস্তা মেরামতির দাবিতে বার বার বলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ জন্য অনেকবার পথ অবরোধেও নামা হয়েছে। তাপ্পি দেওয়ার মতো নমো নমো কাজ হয়েছে। ফলে সমস্যা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে গেল। এ বার অন্তত চোখ খুলুক প্রশাসনের আধিকারিকরা।’’ বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “রাস্তাটির মেরামতি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে শীঘ্রই কথা বলব।”
এ দিকে, শনিবার হুড়া থানার লালপুর-মানবাজার রাস্তায় মাগুড়িয়া মোড়ের অদূরে জলট্যাঙ্কের কাছে দু’টি মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম সন্তোষ ধীবর (৩২) ও ইউনুস আনসারি (৫০)। পুঞ্চার বাসিন্দা সন্তোষ ধীবরকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হুড়া থানার আমলাতোড়া গ্রামের বাসিন্দা ইউনুসকে বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁরও মৃত্যু হয়।