চিহ্নিত: বৃক্ষরোপণের জন্য টিলায় খোঁড়া হয়েছে মাটি। এই ধরনের কাজের জন্য জায়গা বাছতে প্রযুক্তির সাহয়তা নেবে প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র
একশো দিনের কাজের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে ‘জিআইএস’ (জিওগ্রাফিক্যাল ইনফর্মেশন সিস্টেম) ব্যবস্থার সাহায্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানচিত্র ব্যবহার করতে চলেছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। ’পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে জিআইএস-এর মাধ্যমে এ বার পরিকল্পনা করা ও তা কার্যকর করা হবে। এ ভাবে কাজের জন্য পুরুলিয়াকেই রাজ্যের প্রথম জেলা হিসেবে বাছা হয়েছে।’
‘জিপিএস’ (গ্লোবাল পজ়িশনিং সিস্টেম)-এর মাধ্যমে জেলার ১৭০টি পঞ্চায়েতের একশো দিনের কাজের পরিকল্পনার মানচিত্র ধরা থাকবে অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ ধরে। এতে ওই এলাকায় সে প্রকল্প কতটা কাজের হবে, তা সহজে বোঝা যাবে।
যেমন কোথাও পুকুর সংস্কার করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মানচিত্রে জায়গাটির উল্লেখ থাকলে, ওই পুকুর কাটা হলে তার আশপাশের কতখানি জমিতে সেচের সুবিধা হবে, তা জানা যাবে। ওই জায়গাটির জন্য আর কী-কী উপযুক্ত পরিকল্পনা আগামী দিনে নেওয়া যাবে, তা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখেই আধিকারিকেরা বুঝতে পারবেন।
‘জিপিএস’-এর ব্যবহার আগেই এই প্রকল্পে শুরু হয়েছে। তবে তা হত কাজ শেষ হওয়ার পরে। সে ক্ষেত্রে কাজ হওয়া জায়গার উল্লেখ করে ছবি-সহ তথ্য ‘আপলোড’ করা হত। তাতে কোথায়, কী কাজ হয়েছে, তা জানা যেত অফিস থেকে।
তবে পরিকল্পনা-পর্বে এই পদ্ধতি অবলম্বনে উন্নয়নমূলক কাজ আরও বাস্তবসম্মত হবে বলে মনে করছেন আধিকারিকেরা। জেলাশাসক জানান, সম্পদের পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং নিখুঁত মানচিত্র যদি পঞ্চায়েত ধরে- ধরে কম্পিউটারে রাখা থাকে, তা হলে উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। কোথায় জলাশয় রয়েছে বা কোন জায়গার মাটির চরিত্র কেমন— এই সমস্ত তথ্য যদি হাতের কাছে থাকে, যে কোনও পরিকল্পনা গ্রহণে এক ধাপ এগিয়ে থাকা যায়।
এ কাজে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করবে বলে জানা গিয়েছে। জেলাশাসক জানান, ‘জিআইএস ম্যাপিং’ করার প্রশিক্ষণ নিতে কয়েকজন কর্মীকে পাঠানো হবে। তাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এলে, শুরু হবে কাজ।
একশো দিনের কাজে সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকল্প নেওয়ার আগে জেলার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ‘জিআইএস ম্যাপিং’ ব্যবস্থা কার্যকর হলে তা জেলার উন্নয়নকেই তরাণ্বিত করবে বলে মনে করছেন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। সে ক্ষেত্রে প্রকল্প রূপায়ণে স্বচ্ছতাও বাড়বে বলে তাঁদের ধারণা।