চাকরির টোপ দিয়ে এক নাবালিকাকে পাচার করার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ছাতনা থানা এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ঝিলাপি বাউরি ও তাঁর মেয়ে ফুলন বাউরি ছাতনা থানার ঝাঁটিপাহাড়ি, বাবলু তিওয়ারি পুরুলিয়ার সাকরাপাড়া, মহেশ সিংহ বোকারোর জোরিডি থানার ও রঘুবীর প্রজাপতি মধ্যপ্রদেশের বোরাডা থানার উত্তনাওয়াদ এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের রবিবার বাঁকুড়া আদালতে পেশ করা হলে ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
প্রাথমিক তদন্ত করে ও ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশের দাবি, কয়েক সপ্তাহ আগে আগে ওই নাবালিকাকে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঝিলাপি, ফুলন ও বাবলু ঝাড়খণ্ডের পেত্রাওয়ারে নিয়ে যায়। ওই নাবালিকাকে নিয়ে আসা হচ্ছে খবর পেয়েই এই চক্রের পাণ্ডা মহেশ পেত্রাওয়ারে রঘুবীরকে ডাকে। রঘুবীরের সঙ্গে আগেই ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে নাবালিকাকে বিক্রির কথাবার্তা পাকা করে রেখেছিল সে। সেখানেই ওই নাবালিকার সঙ্গে রঘুবীরের জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। কেড়ে নেওয়া হয় নাবালিকার মোবাইল ফোনও। রঘুবীর বিয়ে করে নাবালিকাকে নিয়ে উত্তানাওয়াদে ফিরে যায়। সেখান থেকে এক পড়শির মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়িতে যোগাযোগ করে ওই নাবালিকা। কিন্তু সে কোথায় আছে তা বলতে পারেনি।
তবে ঝিলাপি ও তাঁর মেয়ে চাকরির টোপ দিয়ে তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছে বলে ফোনে সে জানায়। ওই নাবালিকা তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে জানতে পেরে রঘুবীর তাকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। মেয়েটির পরিবার গত ৩০ এপ্রিল পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ ঝিলাপি ও তাঁর মেয়ে ফুলনকে আটক করে বাবলু ও মহেশের কথা জানতে পারে। বাবলুকে পুরুলিয়া থেকে ও মহেশকে পেত্রাওয়ার থেকে আটক করে জেরা শুরু করে ছাতনা পুলিশ। অন্যদিকে যে মোবাইল নম্বর থেকে ওই নাবালিকা বাড়িতে ফোন করেছিল সেই নম্বরের হদিসও শুরু করে পুলিশ। টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ উত্তনাওয়াদের খোঁজ পায়। তারপর ছাতনা থানার ওসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাত জন পুলিশের একটি পুলিশ দল বৃহস্পতিবার উত্তনাওয়াদে পাড়ি দেয়। সেখানে রঘুবীরের বাড়ি থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে রঘুবীরকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়ায় নিয়ে আসে। এ দিন আদালতে ওই নাবালিকাকে তোলা হয়। পরে তাকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়। তার কথায়, “আমরা গরীব। বাবা নেই। মাও কষ্ট করে রোজগার করে। তাই চাকরির কথা শুনে পা বাড়িয়ে ছিলাম। ভাবতেই পারিনি এই অবস্থায় পড়তে চলেছি।”