পাইকর হাসপাতালের জন্য তৈরি আনাজ ও ফলের বাগানের এখন এমনই দশা। নিজস্ব চিত্র tanmoydutta1568@gmail.com
দুই বছর আগে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে মুরারই ২ ব্লকের পাইকর হাসপাতালের পতিত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছিল ফলের বাগান। বাগানের উদ্বোধন করেছিলেন জেলা শাসক বিধান রায়। সেই বাগান আজ আগাছায় ভর্তি। শনিবার গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশ গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মুরারইয়ের বিধায়ক মোশারফ হোসেনের দাবি, ম কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় এই সমস্যা।
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাগান তৈরি করা হয়েছিল মূলত হাসপাতালের রোগীদের কথা ভেবে। উদ্দেশ্য ছিল, জৈব সার ব্যবহার করে ওই বাগানে আনাজ ও ফল রোগীদের দেওয়া হবে। হাসপাতাল চত্বরে আনাজ, ফল ও মাছ চাষের ফলে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার পাবেন রোগীরা। সেই মতো বেশ কয়েক বিঘে জমিতে চাষও শুরু হয়। জানা গিয়েছে, প্রথমে রাজ্য সরকারের মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে কাজ শুরু হরলেও পরে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের আওতায় এনে অব্যবহৃত জমি সংস্কার করে সবুজায়ন করা হয়েছিল। পাঁচ বিঘা অব্যবহৃত জমির উপরে হড়ে তোলা হয় আনাজ ও ফলের বাগান।
সূত্রের খবর, প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আগাছা কেটে আনাজ ও ফলের গাছ লাগানো হয়। ১২ লক্ষ টাকার গাছ ও সৌন্দর্যয়নের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। বাগানে ফুলকপি, বিভিন্ন রকম শাক-সহ দশ রকম আনাজ, ১৭ রকমের ফলের গাছ এবং ওষধি গাছ বসানো হয়েছিল। জমির মাঝে মাঝে খাল কেটে মাছ চাষও শুরু করা হয়।বেশ কয়েক বছর সেই আনাজ ও ফল সরবরাহ করা হয় রোগীদের। রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের অভিযোগ, মাস ছয়েক ধরে রক্ষণাবেক্ষণ না-হওয়ায় বাগান বেহাল। আগাছায় ভরে গিয়েছে। বহু আনাজ ও ফল গাছ শুকিয়ে গিয়েছে স্রেফ জলের অভাবে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, যদি রক্ষণাবেক্ষণই করতে না-পারে প্রশাসন, তা হলে লক্ষ লক্ষ টাকা কেন খরচ করে বাগান তৈরি করা হল? এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক বলেন, ‘‘কেন্দ্র ১০০ দিনের বকেয়া টাকা আটকে রাখায় বাগানের এই অবস্থা হয়েছে। বাগানে যে অস্থায়ী কর্মীরা কাজ করতেন, তাঁরা মজুরি না-পেয়ে কাজ ছেড়েছেন। কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য এই রকম বহু প্রকল্প বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, কেন্দ্র না-দিলেও ফের আগাছা সাফ করে আনাজ ও ফলের চাষের ব্যবস্থা করা হবে। বিডিও (মুরারই ২) মিন্টু ঘোষাল বলেন, “মাস খানেক আগে এসেছি। বিষয়টি নজরে পড়েছে। রোগীদের কথা ভেবে বাগান পরিষ্কার ও আনাজ চাষ শুরু হবে। বিষয়টি জেলায় জানানো হয়েছে।” বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক আরিন দত্তের দাবি, “১০০ দিনের কাজের টাকা দিয়ে তৃণমূল নেতাদের পকেট ভরেছে। দুর্নীতির জন্যই কেন্দ্র টাকা পাঠানো বন্ধ করেছে। এত টাকা ব্যয় করার পরেও কেন রক্ষণাবেক্ষণ হল না, এই প্রশ্নের জবাব আমরা প্রশাসনের থেকে চাইব।”