জমা: এ ভাবেই পড়ে রয়েছে জঞ্জাল। রামপুরহাট মেডিক্যাল চত্বরে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
হাসপাতাল চত্বরের বর্হিবিভাগের পিছনে জমে আছে বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য। আবার হাসপাতাল ঢুকতে জাতীয় সড়কের ধারে টিন দিয়ে ঘেরা জায়গার মধ্যে হাসপাতালের অন্য আবর্জনা জমে আছে। দু’টি জায়গা থেকেই আবর্জনা নিয়মিত সাফ হওয়ার কথা। কিন্তু কোনওটিই নিয়মিত সাফাই হয় না বলে অভিযোগ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দুর্গন্ধে নাকাল রোগী ও রোগীর পরিজনেরা নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাতায়াত করছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি সংস্থা নিয়মিত দুর্গাপুর থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু অন্য বর্জ্য সাফ করার দায়িত্ব স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের। কিন্তু পঞ্চায়েতের সেই সামর্থ্য না থাকার জন্য পুরসভার সেই জঞ্জাল সাফ করার কথা। কিন্তু অনিয়মিত জঞ্জাল সাফ না হওয়ায় হাসপাতাল চত্বেরে দিনের পর দিন জঞ্জাল জমছে বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পিছন দিকে সিঁড়ি দিয়ে বর্হিবিভাগের দোতালায় ওঠার আগে একটি জায়গায় স্তুপীকৃত হয়ে আছে অজস্র প্যাকেট। ঐ প্যাকেটের কোনওটাতে ব্যবহার করা গ্লাভস, কোনওটিতে ইঞ্জেকশন, কোনওটিতে রয়েছে স্যালাইনের বোতল। বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য ভরা প্যাকেটগুলি থেকে বেশ কিছু বর্জ্য বাইরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। অল্প বৃষ্টিতে এলাকায় জল জমলে বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য জলে ভাসতেও দেখা যায়। অথচ হাসপাতালে ব্যবহৃত এই সমস্ত বর্জ্য গুলি নিয়মিত সাফ হওয়ার কথা। না হলে তা থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘হাসপাতালের ব্যবহৃত কঠিন বর্জ্য দুর্গাপুরের একটি সংস্থা নিয়মিত সাফ করে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে কী হয়েছে, কেন বর্জ্য জমে আছে খোঁজ নিয়ে দ্রুত সাফ করার জন্য বলব।’’
মেডিক্যাল বর্জ্য ছাড়া হাসপাতাল চত্বরের অন্য জঞ্জাল সাফাই নিয়ে রামপুরহাট পুরসভার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমএসভিপি। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভা অনিয়মিত জঞ্জাল সাফাই করার ফলে বেশ কয়েকদিনের জমে থাকা জঞ্জালে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুরসভাকে বলা হলেও তারা টাকা চাইছে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল জঞ্জাল তুলে ফেলার জন্য জন্য পুরসভাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও টাকা পয়সা দেওয়ার কথা নয়।’’
রামপুরহাট পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশ্বিনী তিওয়ারি পাল্টা বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে হাসপাতালের জঞ্জাল তুলে আনার জন্য ছ-সাত কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রতিদিন ট্রাক্টরের তেল খরচ আছে। জঞ্জাল তোলা নামানোর জন্য শ্রমিকের খরচ আছে। প্রতিদিন এর জন্য দু’হাজার টাকা খরচ হয়। দু’বছর আগে মাত্র দু’মাস ২৫ হাজার টাকা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দিয়েছিলেন। এখন আর দেন না। সে জন্য সবসময় জঞ্জাল তুলে আনা হয় না।’’ রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পিয়ারুল ইসলাম জানান, মাঝে মাঝে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জঞ্জাল স্থানীয় দখলবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে তুলে ফেলা হয়। কিন্তু নিয়মিত সাফাই করার মতো পরিকাঠামো পঞ্চায়েতের না থাকায় অসুবিধে হয়। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য আর্থিক সাহায্যের স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন অশ্বিনীবাবু।