পুরসভায় টোটো চালকদের আবেদন। —নিজস্ব চিত্র।
পথেঘাটে বেলাগাম টোটো। কখনও চালকের আসনে নাবালকও। তাই টোটো চালকদের নিয়মে বাঁধতে কড়া হচ্ছে পরিবহণ দফতর। সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ দফতর প্রতিটি জেলায় নির্দেশ দিয়েছে, টোটোর রেজিস্ট্রেশন এ বার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে চালকদেরও টোটো চালানোর জন্য আলাদা করে লাইসেন্স করাতে হবে। তা না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতদিন ব্যাটারিচালিত গাড়ি টোটোর রেজিস্ট্রেশন করাতে হত না। চালকেরও লাইসেন্স করানোর বিধি ছিল না। চালকের ন্যূনতম বয়সেরও গণ্ডি ছিল না। তাই যে কেউ সাইকেল, রিকশার মতো টোটোর চালক হতে পারতেন। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে।
বাঁকুড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী মঙ্গলবার বলেন, “টোটোর রেজিস্ট্রেশন ও চালকদের লাইসেন্স করানোর জন্য সদ্য দফতরের নির্দেশিকা এসেছে। আমরা কাজ শুরুর পরিকল্পনা নিচ্ছি। টোটোর নির্দিষ্ট রুটও তৈরি করা হবে।’’
দফতর সূত্রের খবর, ছাড়পত্র দেওয়ার আগে চালকদের কমবেশি দিন দশেক ধরে বিভিন্ন পরীক্ষা নেওয়া হবে। কারণ বিধিনিষেধের বালাই না থাকায় অনেকেই পথ-আইন না জেনেই টোটো চালাচ্ছেন। তাই পথ-আইনের প্রাথমিক ধারণা কার কেমন তা যাচাই করে নিতে চাইছে দফতর। সে জন্য কয়েকদিন ধরে তাঁদের পথ-আইনের জ্ঞান ও টোটো চালানোর দক্ষতা খতিয়ে দেখা হবে। ১৮ বছরের কম কেউ লাইসেন্স করাতে পারবেন না।
অন্য দিকে, টোটোর দাপাদাপিতে শহরে যানজট বেড়ে গিয়েছে। বাঁকুড়া শহরে গ্রামাঞ্চলের টোটো নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয়েছে পুরসভা। বাঁকুড়া পুরসভা শহরের টোটোগুলিতে বিশেষ নম্বর এবং পুলিশের তরফে প্রত্যেক টোটোয় পৃথক ‘কিউআরকোড’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে শহরের ৭০০ টোটো পুরসভার বিশেষ নম্বর ও পুলিশের ‘কিউআরকোড’ নিয়েছে। অথচ তার পরেও ওই বিশেষ নম্বর ছাড়াই শহরের পথে বহু টোটো চলাচল করছে।
এর বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে বাঁকুড়া শহরে টোটো ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। শহরে টোটো চালাতে পুরসভার ছাড়পত্র পেতে প্রায় ১৩০০টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানান বাঁকুড়ার উপপুরপ্রধান হিরালাল চট্টরাজ। কিন্তু সব মিলিয়ে ২,০০০ টোটো শহরের পথে নামলে যানজট সমস্যার সঙ্গে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়বে বলে মত বাসিন্দাদের। বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুজয় ভৌমিক, পার্থ গোপ বলেন, “দিনের ব্যস্ত সময়েও দেখি কিশোররা টোটো চালাচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী চাপানো হচ্ছে। যেখানে সেখানে টোটো দাঁড়িয়ে পড়ায় যানজট ও দুর্ঘটনাও ঘটছে।’’ টোটো চালানোর জন্য আবেদন করতে আসা পাপু দত্ত, সত্যম দাস বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু নিয়ম নীতি তৈরি করে টোটো চালানোর জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হোক।”