অনিয়ম: দুর্ঘটনাতেও ফেরে না হুঁশ। বাসের ছাদে যাত্রী তোলা চলছেই। রামপুরহাটে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে এসে বাসের ছাদে থাকা চার জন আহত হলেন। রামপুরহাটের শালবাদরার বাসিন্দা প্রত্যেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে রামপুরহাট থানা এলাকার শালবাদরা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার পচইবেড়া গ্রাম থেকে বরযাত্রী বোঝাই বাসটি শালবাদরার দিকে ফিরছিল। গ্রামে ঢোকার আগে বাসের ছাদে থাকা টিনের বাক্স উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন তারের সংস্পর্শে এসেই এই দুর্ঘটনা। বাসের ছাদেও সেই সময়ে জনা পাঁচেক লোক ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। তাঁদের মধ্যে চার জনকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আহতদের অবস্থা গুরুতর। প্রত্যেকেরই চিকিৎসা চলছে। সকলেই শালবাদরার বাসিন্দা।
এ দিনের ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বাসের ছাদে চেপে যাত্রী পরিবহণ চলছেই। স্থানীয়েরাও মানছেন, অভ্যাসের বশেই বাসের ছাদে চেপে উঠে বসেন অনেকেই। বস্তুত, প্রতিদিনই বাসের ছাদে ভিড় করে এক শহর থেকে আর এক শহর, এক জেলা থেকে অন্য জেলাতে চলেছেন যাত্রীরা। সরকারি আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাসের ছাদে যাতায়াতের এই ছবি নতুন নয়। মাঝেমধ্যে পরিবহণ দফতরের নজরদারিতে বন্ধ থাকলেও যেই কড়াকড়ি শিথিল হয়ে যায়, তেমনি শুরু হয় বিপজ্জনক ভাবে বাসের ছাদে লোক তোলা।
অভিযোগ, বেসরকারি বাস তো বটেই সরকারি বাসও ছাদের উপরে লোকবোঝাই করে যাতায়াত করছে। এর ফলে বিপদও হচ্ছে। এই অভ্যাস যে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে জাঁকিয়ে বসেছে, মঙ্গলবারের ঘটনাই তার প্রমাণ। অনেক সময়েই রাস্তার পাশে থাকা গাছের ডালে লেগে আহত হচ্ছেন যাত্রীরা। আবার রাস্তায় বাঁক নেওয়ার সময় অন্যমনস্ক থাকলেও যে কোনও মুহূর্তে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবু প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন অসংখ্য যাত্রী। একটি বাসের কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনেকসময় বাসের ভিতরে ভিড় থাকলে ছাদে যাত্রী চাপানো হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাসের কর্মীরা নিষেধ করলেও যাত্রীরা জোর করে ছাদে উঠে পড়েন। তবে ছাদে উঠলে যে বিপদ যে হতে পারে তা ওই কর্মী স্বীকার করেছেন।
প্রশাসনের অবশ্য দাবি, প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। তার পরেও অবশ্য ফেরে না হুঁশ। মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বাসের ছাদে যাত্রী পরিবহণের বিষয়টি চোখে পড়লেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সঙ্গে যে ছাদে চড়বেন তাঁকেও শাস্তির মুখে পড়তে হবে।”