বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, প্রাক্তন উপাচার্য, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল ছবি।
বিশ্বভারতীর সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আবেদনে সাড়া দিতে রাজি নয় পুলিশ। একাধিক মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল শান্তিনিকেতন থানা। পাল্টা বিদ্যুৎ আবেদন জানিয়েছিলেন, তাঁকে যেন তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। কিন্তু সূত্রের খবর, বিদ্যুতের আবেদন মানছে না পুলিশ। বিতর্কিত প্রাক্তন উপাচার্যের কাছে আবারও পাঠানো হচ্ছে নোটিস।
বৃহস্পতিবারই ছিল বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে বিদ্যুতের মেয়াদের শেষ দিন। সে দিনই তাঁকে থানায় হাজিরা দেওয়ার কথা জানিয়ে নোটিস পাঠায় পুলিশ। তার বিতর্কিত ফলক বসানোর প্রতিবাদে দায়ের হওয়া মামলার পাশাপাশি, আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্যের মতো অন্তত ছ’টি পৃথক অভিযোগ। সেই মামলাগুলি নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিদ্যুৎকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করেছিল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। কিন্তু বিদ্যুৎ পুলিশকে জানান, হাজিরা দেওয়ার জন্য তাঁর তিন সপ্তাহ সময় চাই। সূত্রের খবর, বিদ্যুতের প্রস্তাবে রাজি নয় পুলিশ। তাঁকে হাজিরা দেওয়ার কথা জানিয়ে আবার নোটিস করা হচ্ছে। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন থানার তরফ থেকে নতুন নোটিস জারি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। মেয়াদ ফুরলেও বিদ্যুৎ এখনও উপাচার্যের বাসভবন ছাড়েননি। পুলিশ সূত্রে খবর, নোটিসে তাঁকে জানানো হচ্ছে, অতিরিক্ত তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হচ্ছে না। দ্রুত তাঁকে থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, শান্তিনিকেতন থানা থেকে নোটিস নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাসভবনের নিরাপত্তারক্ষীরা পুলিশকে জানান, শুক্রবার ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বিদ্যুৎ।
বৃহস্পতিবারই মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুতের। যদিও তাঁর কার্যকালের মেয়াদের পুরোটাই বিতর্কে ভরা। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি নিয়ে গোলমাল থেকে শুরু করে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র তকমা সম্বলিত ফলক বসানো নিয়ে মহাবিতর্ক— গত পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন। যে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন, ফলক নিয়ে বিতর্ক। যে ফলকে তাঁর নিজের নাম এবং আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম থাকলেও ছিল না স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের নামই। তারই প্রতিবাদে বুকে রবীন্দ্রনাথের ছবি ঝুলিয়ে দলকে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। সেই মতো কর্মসূচিও শুরু হয়। যদিও তৃণমূলের প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে তাঁকে খুনের হুমকি দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা— এই অভিযোগে পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়ে রেখেছেন বিদ্যুৎ। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ ফুরোনোর পরেই তৃণমূলও কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করে। এই প্রেক্ষিতেই পুলিশের নয়া নোটিস গেল বিদ্যুতের কাছে।