শেষ পর্যায়ের সাজানোর কাজ চলছে। বুধবার। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী
দাঁড়াও পথিকবর...। রাস্তার পাশে শাল জঙ্গলের ছায়া যেন এ ভাবেই ডাক দেয় ক্লান্ত পথচারীদের। খানিক জিরিয়ে ফের রওনা দেন তাঁরা। বিষ্ণুপুরের পাঞ্চেত বনবিভাগের কার্যালয় সংলগ্ন সেই শাল জঙ্গলকে ঘিরেই বন দফতর তৈরি করেছে মনোরম উদ্যান। সেখানে সবুজ ঘাসের গালিচায় বসার জায়গা করা হয়েছে। চোখের শান্তির জন্য তৈরি করা হয়েছে বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের নির্মিত পাঁচচূড়া মন্দিরের ছোট সংস্করণও। প্রকাণ্ড শালগাছের ছায়া তো রয়েছেই। নিজস্বী তোলার জন্য নির্দিষ্ট ‘সেরফি জ়োন’-ও করা হয়েছে। থাকছে প্রজাপতি বাগান। শাল গাছে মাটির হাঁড়িতে পাখির বাসাও বাঁধা হয়েছে। বাগান সাজানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বন দফতর জানিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যেই খুলে দেওয়া হবে তাদের সাজানো বাগানের দরজা।
ডিএফও (বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বনবিভাগ) অঞ্জন গুহ বলেন, “এখানে স্থানীয় বনসুরক্ষা কমিটির ছেলেমেয়েদের খেলাধুলো করার জন্য কাছেপিঠে জায়গা ছিল না। পর্যটকদের অনেকেও মুকুটমণিপুরে যাওয়ার পথে পিচ রাস্তার ধারে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেন। এ বার তারা সবাই এই শিশু উদ্যানে এসে ক্ষণিকের বিশ্রাম নিতে পারবেন। মন্দির ঘেরা বিষ্ণুপুরের ইতিহাসের সঙ্গে বনবনানীর মেল বন্ধন করাতেই এই উদ্যোগ।” তিনি জানান, বন সংরক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
বন দফতর সূত্রে খবর, এই উদ্যান চালু হওয়ার পরে প্রতি শনিবার এখানে শিল্পীরা হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করতে আসবেন। সরকারী ভাতাপ্রাপ্ত শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হবে।
এই উদ্যানে বিভিন্ন ধরনের ফুল ও পাতাবাহারের গাছ বসানো হচ্ছে। উদ্যানের এক প্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে প্রজাপতি বাগান। রং-বেরঙের প্রজাপতি সেখানে উড়ে বেড়াবে। বিভিন্ন দশা পেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রজাপতি হয়ে ওঠার আগেই বেশ কিছু নষ্ট হয়ে যায়। এ বার তাদের যত্নে বড় করে তোলা হবে। বন দফতর জানিয়েছে, আগ্রহী পর্যটক বিশেষত নবদম্পতিরা এই উদ্যানে এলেই তাঁদের দিয়ে প্রজাপতি ওড়ানোর নিয়ম করা হচ্ছে। তাহলে প্রকৃতিতে প্রজাপতির সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনই পর্যটকদের আসার আগ্রহও দেখা দেবে।