স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেঝেয় ধস, জখম সাত জন

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে দোতলা ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়। মাসতিনেক আগে সেই কেন্দ্রের একটি ঘরের মেঝেয় ফাটল তৈরি হয়। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লাভপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮ ০২:৪১
Share:

ধস: মিরিটি-ব্রাহ্মণপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আহত (ইনসেটে)। বুধবার লাভপুরে। নিজস্ব চিত্র

মাসতিনেক আগে ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটি ঘরের মেঝেয় ফাটল দেখা দিয়েছিল বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের পরিজনদের। বুধবার সেই মেঝে ধসে পড়ে জখম হলেন প্রসূতি, স্বাস্থ্যকর্মী সহ ৭ জন। এক প্রসূতি ও এক আশাকর্মীর আঘাত গুরুতর। তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দিন বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে লাভপুরের মিরিটি-ব্রাহ্মণপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে দোতলা ওই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়। মাসতিনেক আগে সেই কেন্দ্রের একটি ঘরের মেঝেয় ফাটল তৈরি হয়। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সেই ঘরেই ৪ জন প্রসূতিতে পরীক্ষা ওষুধ দিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী চন্দ্রিমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন চার জন আশাকর্মীও। আচমকা ঘরের মেঝেয় ধস নামে। ৯-১০ ফুট চওড়া গর্তে চেয়ার-টেবিল সহ প্রসূতি, স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢুকে যান। চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করেন।

Advertisement

চোখের সামনে ঘটনাটি দেখেছিলেন অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী অনুপম মণ্ডল, স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম সরকার। তাঁরা বলেন— ‘‘আমরা ওই ঘরের দরজার বাইরে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ হুড়মুড়়িয়ে মেঝে ধসে পড়ে।’’ ওই ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তপন ঘোষ, জটাধারী মণ্ডল জানান, এমন ঘটনা এক দিনে হয় না। অনেক দিন ধরে একটু একটু করে মেঝের তলা ফাঁপা হয়েছে। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁদের বক্তব্য, কোনও প্রসূতিদের কোলে সন্তান থাকলে বড় বিপর্যয় ঘটতে পারত।

আশাকর্মী ইতি মণ্ডল, প্রসূতি নাজনা খাতুনদের চোখমুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ। তাঁরা বলেন— ‘‘মেঝে ভেঙে নীচে পড়ার সময় মনে হয়েছিল মরেই গেলাম। ভেবেছিলাম এর পরে বাড়িটাই আমাদের উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে!’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ওই ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের অনুমান, ইঁদুরের গর্ত বা ফি বছরের বন্যায় মেঝের নীচে ফাঁপা হয়েও এমন হতে পারে। সরকারি নিয়ম না মেনে বাড়ি তৈরির আশঙ্কাও করছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে একটি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে, তাতেও এমন ঘটতে পারে।

উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম সুলেখা ঘোষ জানান, মাসতিনেক আগে মেঝেয় ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেই সময় প্রশাসনকে জানানো হয়। এ দিন ঘটনাস্থলে যান

লাভপুর ব্লকের বিডিও শুভ্র দাস। তিনি দাবি করেন, মেঝেয় ফাটলের বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী ভাবে এমন ঘটল তা দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement