একটু জলের জন্য। হাঁড়িচাচার তৃষ্ণা নিবারণ। সিউড়িতে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তাপপ্রবাহ চলছে। সকাল গড়ালেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। গরম থেকে বাঁচতে পাখা, শীতাতপ যন্ত্র, কুলার—ব্যবহার করছেন অনেকেই। কিন্তু এই গরমে সঙ্কটে পশু, পাখিরাও। বিশেষ পানীয় জলের অভাবে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা। পুকুরের জল শুকিয়ে যাওয়ায় তাদেরপানীয় জলের উৎস মিলছে না। গত কয়েক দিনের তাপপ্রবাহে একাধিক পশু, পাখির মৃত্যুও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশু, পাখিদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বনের পশু, পাখিদের জন্য প্রত্যেকটি জঙ্গলের রেঞ্জ, বিট, নার্সারি ও বাগান এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন দফতরের পক্ষ থেকে। বনের ভিতরে মাটির পাত্রে জল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন সংলগ্ন গ্রামগুলিতে এ নিয়ে লাগাতার প্রচারও চালান হচ্ছে। একই সঙ্গে এই সময়ে জঙ্গলে যাতে কোনও ভাবে আগুন না-লাগে, বনরক্ষীদের তাও বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। এডিএফও শ্রীকান্ত ঘোষ বলেন, “জঙ্গলের পশু, পাখিদের যাতে জলকষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সবরকম ব্যবস্থা হচ্ছে। এ সময়ে জঙ্গলে আগুন লাগলে পশু, পাখিদের সমস্যা তো বটেই, তা নেভানোও অত্যন্ত দুষ্কর।”
অন্য দিকে, গৃহপালিত পশু, পাখির ক্ষেত্রে পানীয় জলের সঙ্গে ওআরএস দিতে পারলে ভাল হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।তাদের খাবারেও গুরুত্ব দিতে হবে। খুব ভারী খাবার যেন দেওয়া না-হয়, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে বলা হচ্ছে। গৃহপালিত নয়, এমন পশু, পাখির জন্য বাড়ির বাগান বা ব্যালকনিতে জলের পাত্র রাখার অনুরোধ জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সিউড়ির এক প্রাণী বিশেষজ্ঞ দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, “যেখানে লোক চলাচল কম, সেখানেজলের পাত্র রাখলে পশু, পাখিদের পানীয় জলের অসুবিধা কিছুটাদূর হতে পারে। মাটির পাত্রে জল রাখলে জল ঠান্ডা থাকার সম্ভাবনা বেশি। পাত্রের মুখ বড় ও চওড়া হলে পাখিরা সেখানে গা ভিজিয়ে স্নানও করতে পারে। জলে ওআরএস মিশিয়ে দিলে আরও ভাল।” তাঁর দাবি, ‘‘যতদিন না-পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে, তত দিন পশু, পাখিদের এই সমস্যা চলবেই। যতটা তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়, সেটুকুই মানুষ হিসেবেআমাদের কর্তব্য।’’