এ বার জঙ্গলে মিলল হাতির দেহ, ধোঁয়াশা

জেলার একপ্রান্তে যখন একটি দাঁতালকে সুস্থ করে তুলতে হিমসিম খাচ্ছে বন দফতর। সেই সময় বাঁকুড়া জেলারই আর এক প্রান্তে মিলল একটি কম বয়েসি মাদি হাতির দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ০৩:১২
Share:

জেলার একপ্রান্তে যখন একটি দাঁতালকে সুস্থ করে তুলতে হিমসিম খাচ্ছে বন দফতর। সেই সময় বাঁকুড়া জেলারই আর এক প্রান্তে মিলল একটি কম বয়েসি মাদি হাতির দেহ।

Advertisement

শুক্রবার সকালে সোনামুখীর অনন্তবাটি গ্রামের জঙ্গলে একটি কম বয়সি হাতিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। বুধবার রাতে বড়জোড়ার কানাই গ্রামে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক ভাবে সেই রাতে বাসিন্দারা হাতিটির শুশ্রূষা শুরু করলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন দফতর হাতিটিকে বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু তারই মধ্যে পাশের সোনামুখীতে একটি হাতির মৃত্যু হওয়ায় স্বস্তিতে নেই বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগ। পর পর দু’টি ঘটনায় চিন্তায় পড়েছেন বনকর্মী ও আধিকারিকরা। অতিরিক্ত গরম না কি এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে, সেটাই হয়ে উঠেছে চর্চার বিষয়। যদিও এ বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে চাননি বনকর্তারা।

সোনামুখীর রেঞ্জ অফিসার শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ জানতে পারি, একটি হাতি মরে পড়ে আছে ইন্দকাটা বিটের অনন্তবাটি গ্রামের জঙ্গলে। হাতিটির বয়েস ১০-১২ বছর। বাঁকুড়া থেকে পশু চিকিৎসকদের আনিয়ে ময়নাতদন্তের পর দাহ করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, দাহ করার আগে দু’টি দাঁত দুটি তুলে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না জানা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তাঁরা কিছুই বলতে পারছেন না।

Advertisement

অন্যদিকে বড়জোড়ায় কানাই গ্রামে বুধবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়া হাতিটি এ দিনও উঠে দাঁড়াতে পারেনি। বড়জোড়ার রেঞ্জ আধিকারিক মোহন শীট বলেন, ‘‘পশু চিকিৎসকেরা যথারীতি হাতিটিকে সুস্থ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। স্যালাইন চলছে। তবুও উঠে দাঁড়াতে পারছে না হাতিটি। তাই বাইরে থেকে চিকিৎসক দল নিয়ে আসার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।’’ বন দফতরের কোনও কোনও আধিকারিক জানান, গরমে চারিদিকে জলের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে শরীরে জলাভাবে হাতিদের অসুস্থ হয়ে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

আবার সোনামুখীতে এর আগে জমির ফসল বিদ্যুৎবাহী তারের বেড়া দিয়ে আগলানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যুর একাধিক অভিযোগও সামনে আসে। তাই এ দিন ওই হাতির মৃত্যুর পরে ফের সেই আশঙ্কার কথা অনেকের মুখে শোনা গিয়েছে।

যদিও এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অনন্তবাটি ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, হাতির জন্য জীবনযাত্রা অনেক সময় বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও ‘হাতি ঠাকুর’ হিসেবে পুজো পায়। এ দিনও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মৃত হাতির মাথায় অনেকে সিঁদুর দিচ্ছেন। শুঁড়ের সামনে বাতাসা জোগাচ্ছেন। গলায় পরিয়ে দিচ্ছেন ফুলের মালা। তা দেখিয়েই কেউ কেউ দাবি করেন, ‘‘তাহলে হাতিকে আমরা মারতে যাব কেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement