নলহাটিতে। নিজস্ব চিত্র।
প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে দশমীর রাতে কিছুটা উত্তেজনা ছড়াল নলহাটি শহরে। থানার সামনে প্রতিমা রেখে বিক্ষোভ দেখান কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ লাঠি চালানোর বিষয়টি মানতে চায়নি। রাতের দিকে পুজো উদ্যোক্তাদের ডেকে পুলিশ প্রতিমা নিরঞ্জন করানোর বন্দোবস্ত করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, নলহাটি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিংহবাহিনী দুর্গোপুজো হয়। এটি পারিবারিক পুজো। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কামারপাড়ার পুজো বারোয়ারি। নলহাটির এই দুই প্রাচীন পুজো বিভিন্ন রীতি মেনে হয়। এলাকার মানুষের কাছে সিংহবাহিনী বড় বোন। কামারপাড়া দুর্গা ছোট বোন। প্রথা অনুযায়ী প্রতি বছর দুই বোনের শোভাযাত্রা এক সঙ্গে বের হয়। বাঁশের মাচায় প্রতিমাকে কাঁধে চাপিয়ে শোভাযাত্রা বেরোয়। স্থানীয় ভাবে এটাকে বাইচ খেলা বলা হয়। সেই খেলা দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়।
এ বার করোনার আবহে পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাইচ খেলা বন্ধের অনুরোধ করা হয়েছিল। দুই প্রতিমার শোভাযাত্রার রুটও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো সোমবার বিকেলে রীতি মেনে প্রতিমা কাঁধে চাপিয়ে পুলিশের বেঁধে দেওয়া রুটে যাচ্ছিলেন সিংহবাহিনী পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু যুবক অতি উৎসাহে জোর করে প্রতিমা নিয়ে থানার সামনে বাইচ খেলা শুরু করে দেন। পুজো উদ্যোক্তা কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবকেরা প্রথমে ছোট বোনের অপেক্ষায় কামারপাড়ায় বেশ কিছুক্ষণ আমাদের ঠাকুর রেখে দেয়। সেখান থেকে তুলে শ্মশানকালী তলায় নিয়ে যায়। এর পরে থানার আশপাশে বাইচ খেলা শুরু করে দেয়।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, তখনই পুলিশ বাধা দেয়। লাঠি উঁচিয়ে জমায়েত হটিয়ে দেন পুলিশকর্মীরা। পুলিশের ভয়ে
সিংহবাহিনীর প্রতিমা থানার সামনেই নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান ওই যুবকেরা। পরে পুলিশের সাহায্য নিয়ে হাজরাপাড়ার পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। এর পরে বিসর্জন হয় কামারপাড়ার প্রতিমার।
অন্য দিকে, দশমীর বিকেলেই নলহাটি থানার শীতলগ্রামে দুই পাড়ার ঝামেলা মেটাতে গিয়ে আক্রান্ত হন এক সিভিক ভলন্টিয়ার। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, শীতলগ্রামের মালপাড়ার সঙ্গে নামোপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে ঠাকুর দেখা নিয়ে গণ্ডগোল বাধে। সেই সময় নলহাটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারাও ক্ষোভের মুখে পড়ে। আক্রান্ত হন এক সিভিক কর্মী। পরে বিশাল
পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যও রয়েছেন।