যন্ত্রও ‘সিল’ করে দেওয়া হল কোতুলপুরে। নিজস্ব চিত্র
জেলার একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়মে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসায় নড়েচড়ে বসল বাঁকুড়ার স্বাস্থ্য দফতর। শুক্রবার কোতুলপুর এবং সোনামুখীতে একাধিক সেন্টারে আচমকা পরিদর্শনে যান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেনের নেতৃত্বে একটি দল। সূত্রের খবর কোতুলপুরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গুরুতর অনিয়ম নজরে আসায় সেটি বন্ধ করা হয়েছে। সোনামুখীর একটি সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে শো-কজ় করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত মোট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ৬৩। পর্যায়ক্রমে সেগুলিতে পরিদর্শনে যাবেন স্বাস্থ্য-কর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতরের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ দিন সকালে কোতুলপুরের নেতাজি মোড় এলাকায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আচমকা পরিদর্শনে যায়। পরিদর্শকদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াও ছিলেন জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিকও।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায় ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি না নিয়ে কোনও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নতুন কোনও যন্ত্র বসানো যায় না। কিন্তু কোতুলপুরের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নিয়ম ভেঙে আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন বসানো হয়েছে।’’ এখানেই শেষ নয়। শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘ওই সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফি করার জন্য এক বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি গত জানুয়ারি মাসে চাকরি ছেড়ে চলে যান। দেখা যায়, তাঁর পুরনো সিল এখনও ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর সই জাল করে রিপোর্ট বানানো হচ্ছে। এ ছাড়া, একাধিক অভিযোগ বিভিন্ন দফতরে জমা পড়েছে ওই সেন্টারটির বিরুদ্ধে।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই কেন্দ্রের মালিককে না পেলেও কর্মীদের সামনে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। পরে সেন্টারটিও সিল করে দেন পরিদর্শকেরা।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, “কোতুলপুরের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আমাদের কাছেও আসে। পরিদর্শনের পরে সেন্টারটিকে সিল করে দেওয়া হয়। ওই সেন্টারের মালিকের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোতুলপুরের ওই সেন্টারে গিয়ে তার মালিকের দেখা মেলেনি। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের পরিদর্শ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সেখানকার কর্মীরাও। প্রশাসন সূত্রে খবর, একাধিক ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। কয়েকটি অভিযোগ বেশ গুরুতর।
কোতুলপুর ছাড়া, এ দিন পরিদর্শকেরা সোনামুখীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। সূত্রের খবর, সেখানেও কিছু ত্রুটি তাঁদের নজরে আসে। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে শো-কজ় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি বলেন, “এ দিন দু’টি ডায়গনেস্টিক সেন্টারে রুটিন পরিদর্শনে যাওয়া হয়েছিল। এই কাজ চলবে।”