—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পুজোর মুখে ডেঙ্গি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পুরুলিয়া শহরে। গত দু সপ্তাহে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন পুরসভা ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
পুরসভা সূত্রে খবর, চলতি মরসুমে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ ছুঁয়েছে। গত জুলাইয়ে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫। অগস্টে আক্রান্ত ছিলেন ২১ জন। সেপ্টেম্বর মাসে ৩ জন। সব মিলিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে যেমন বাইরে থেকে জ্বর নিয়ে শহরে আসা লোকজন রয়েছেন, তেমনই শহরের বাইরে না যাওয়া আক্রান্ত ব্যক্তিও রয়েছেন। শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্তরা পুরসভার চিন্তার বিশেষ কারণ।
সম্প্রতি পুরসভা ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা শহরের কয়েকটি এলাকা যৌথ ভাবে পরিদর্শন করেন। সূত্রের দাবি, তাঁরা দেশবন্ধু রোড এলাকায় একাধিক জায়গায় জমে থাকা জলে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা গিজগিজ করতে দেখেন। ওই এলাকায় একাধিক জায়গায় নির্মাণ কাজ চলছে, নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য জমানো জলের মধ্যে লার্ভা দেখে কার্যত চোখ কপালে ওঠে জেলা স্বাস্থ্য-কর্তাদের।
কয়েক বছর আগে এই এলাকা থেকেই শহরে ডেঙ্গি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়েছিল। সে বার নির্মাণ কর্মীদের একাংশ ভিন্ জেলা থেকে জ্বর নিয়ে শহরে আসেন। পরে তাঁদের ডেঙ্গি ধরা পড়ে। সে বারও নির্মাণ কাজের জন্য জমানো জলেই এডিসের লার্ভা দেখা গিয়েছিল। ফের সেই একই জায়গায় জমে থাকা জলে এডিসের লার্ভার উপস্থিতিতে ভাবিয়ে তুলেছে আধিকারিকদের। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বিষয়টি পুরসভার গোচরে আনা হয়েছে।
পুরসভা জানাচ্ছে, বর্তমানে শহরের ৬, ৭ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। চলতি সপ্তাহে ওই ওয়ার্ডগুলির কয়েকটি পাড়ায় গিয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা দেখেন, কিছু বাড়ির চৌবাচ্চার জলে এডিস মশার লার্ভা রয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে চৌবাচ্চা জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে।
জুলাইয়ের তুলনায় অগস্টে আক্রান্তের সংখ্যা চার গুণে পৌঁছেছে, তাই পুরএলাকায় পতঙ্গ নিয়ন্ত্রক দল (ভেক্টর কন্ট্রোল টিম) ও প্রতিটি ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছে পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর। শহরের কোন কোন এলাকায় আবর্জনা ও জল জমে রয়েছে এবং বাড়িতে খোলামুখ পাত্রে জমে থাকা জল কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে তা দেখিয়ে সতর্ক করা হয়। কর্মীদের আরও তৎপর হয়ে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা।
পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘শহরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ ছুঁয়েছে। তিন-চারটি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা একটু বেশি। শহরের একাধিক এলাকায় জমে থাকা জলে এডিস মশার লার্ভাও মিলেছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় পুরসভার কর্মীরা মাঠে নেমে কাজ করছেন। বাসিন্দাদেরও সতর্ক হতে হবে। দেখতে হবে কোথাও যেন জল জমে না থাকে।’’